গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশির মৃত্যু!

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশের পর নিখোঁজ হয়েছেন মিজানুর রহমান (৫০)। তার পরিবারের দাবি গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। শুক্রবার রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণগঞ্জ থানার নোনাগঞ্জ সীমান্তে ওই ঘটনাটি ঘটে বলে সূত্র জানিয়েছে।
নিহত মিজানুর রহমান জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের বেনীপুর গ্রামের ক্যাম্পপাড়ার আয়ুব আলীর জামাতা এবং ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার শেখ পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা নবিছদ্দীনের ছেলে। বিয়ের পর তিনি শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। তার মরদেহ ভারতের কৃষ্ণনগর মহকুমা হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইশাবুল ইসলাম মিল্টন জানান, মিজানুর রহমান কিছুদিন ধরে ভারতীয় গরু অবৈধভাবে আনা নেয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলো। এছাড়াও তিনি সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধভাবে মানুষ পারাপারের কাজও করতো। গত বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে তিনি নিজে এবং তার সহযোগী কয়কেজন অবৈধভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণগঞ্জ থানার নোনাগঞ্জ সীমান্তে যান। সেখান থেকে ফেরার সময় বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে তিনি মারা গেছেন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।
নিহত মিজানের স্ত্রী নাসিমা খাতুন বলেন, ভারতে যাওয়ার জন্য ওই দিন রাতে বেনীপুর গ্রামের মধু মন্ডলের ছেলে বাদল, আরিফের ছেলে জীবন ও কাওসার আলীর ছেলে ফারুক হোসেন তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তারা ফিরে আসলেও তার স্বামী মিজান ফিরে আসেনি। তার সঙ্গে থাকা বাদল তাকে বলেছে, তাদের বিএসএফ তাড়া করেছিলো। সে সময় তারা চলে আসলেও মিজান আসতে পারেনি। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে তারা তাকে ২ হাজার টাকা দিয়ে বলে, মিজান ফিরে আসবে। চিন্তার কোনো কারন নেই। এই টাকা দিয়ে বাজার করে খাও। মিজান ভারতে তার মামার বাড়ি আছে, সুযোগ পেলেই চলে আসবে। কিন্তু তারা আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলাচ্ছে না।
শুক্রবার বাদল বলেন, ভারতে তার মামার বাড়িতে মিজান নেই, সেটা আমরা পরে শুনেছি। শনিবার সকাল থেকে শোনা যাচ্ছে আমার স্বামী ভারতে মারা গেছেন। তবে একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, মিজানের লাশ ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর মহকুমা হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম জাবীদ হাসান জানান, মিজানুর রহমানের স্ত্রী থানায় এসে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন তার স্বামীকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে মহেশপুর-৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেনেন্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ জানান, শনিবার বেলা ১১টার সময় এক মহিলা মৌখিকভাবে তার স্বামী নিখোঁজের বিষয়টি তাদের কাছে জানিয়েছেন। এরপর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফের) কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। তাতে জানতে চাওয়া হয়েছে তারা কোনো বাংলাদেশিকে গুলি করেছে কি না? বিএসএফের কাছ থেকে জানার পর আমরা বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারবো।
স্বাআলো/এসএ

.

Author
মফিজুর রহমান জোয়ার্দ্দার, চুয়াডাঙ্গা
জেলা প্রতিনিধি