দীর্ঘ অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড রোদে সারাদেশের মতো মেহেরপুর জেলায় রোপা আমন ধানের ক্ষেতে ব্যাপকভাবে বেড়েছে মাজরা ও লেদা পোকার আক্রমণ। ফলে কয়েকদিন পরপর বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক প্রয়োগ করেও পোকা দমনে ব্যর্থ হয়ে দিশেহারা চাষীরা।
পোকা দমন বা নিধনে কৃষি অফিসের কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না বলে কৃষকরা অভিযোগ করছেন। তবে, কৃষি বিভাগ বলছেন, অতিমাত্রায় রোদ ও অনাবৃষ্টির কারণে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ বেশি, পোকা নিধনে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে চাষীদের।
কৃষকরা তাদের রোপা আমন ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করছেন। অনেকেই আবার পেতেছেন আলোক ফাঁদ। কিন্তু কিছুতেই প্রতিকার পাচ্ছেন না কৃষকরা।
দেড় বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল ব্রী-ধান ৮৭ রোপণ করেছেন। ধানের গাছও ভালো হয়েছে। কিন্তু পোকার আক্রমণে ধান গাছের মূল কাণ্ড শুকিয়ে যাচ্ছে এবং পাতা খেয়ে ফেছে। স্থানীয় দোকান থেকে কীটনাশক কিনে ক্ষেতে স্প্রে করেছি কিন্তু কোনো উপকার হয়নি।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন ভিত্তিক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা মিলছে না মাঠে। বিভিন্ন কীটনাশক কোম্পানির লোকজন এসে যতোটুকু পরামর্শ দিচ্ছেন শুধুমাত্র সেভাবেই ধানের জমিতে পরিচর্যা করছি। পোকার আক্রমণ থেকে রেহাই না পেলে ধানে ফলন কম হবে এবং লোকসান হবে আমন ধান আবাদে।
এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইমরান হোসেন দাবি করেন, যেসব এলাকায় ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণের কথা বলা হচ্ছে, সেই এলাকার কোনো কৃষক তাদের বিষয়টি জানাননি। ওই এলাকায় কৃষি অফিস থেকে দ্রুত অফিসার পাঠিয়ে মাজরা দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি প্রধান জেলা হিসেবে চাহিদার দ্বিগুণ ধানের আবাদ হয়ে থাকে। উৎপাদিত ধান জেলার কৃষকরা তাদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে অন্য আবাদের খরচের জোগান দেন।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, অন্যান্য জেলায় ভারি বৃষ্টি হলেও মেহেরপুর জেলায় তেমন বৃষ্টি হয়নি। এছাড়াও প্রচণ্ড রোদের কারণে জমিতে পানি থাকছে না। সেচ দিয়েই কৃষকদের আবাদ করতে হচ্ছে। এমন অনাবৃষ্টি আর তীব্র রোদের কারণে আমন ধানে মাজরা, লেদা ও ঘাস ফড়িংসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণ বেড়েছে। কীটনাশক স্প্রে করার পাশাপাশি আলোক ফাঁদ ও ফেরোমন ট্যাফ ব্যবহারের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। অনেকেই উপকার পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া খুব সকালে কীটনাশক স্প্রে করারও পরামর্শ দেন তিনি।
স্বাআলো/এস
.
