ঢাকা অফিস: তীব্র তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। সারাদেশ থেকে আকস্মিক মৃত্যুর খবর আসছে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) সারাদেশে সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
যশোরে অব্যাহত তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোকে আহসান হাবীব (৩৭) নামে এক স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি যশোর আমদাবাদ হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
এ নিয়ে যশোরে হিট স্ট্রোকে তিনজনের মৃত্যু হলো। এর আগে, যশোর সদর ও মনিরামপুরে একজন করে হিট স্ট্রোকে মারা যান।
আমদাবাদ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক এজেডএম পারভেজ মাসুদ বলেন, শিক্ষক আহসান হাবীব সকালে মাঠে কাজ করে ৯টার দিকে স্কুলে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
যশোরে তাপপ্রবাহে শিক্ষকের মৃত্যু
চট্টগ্রামে হিট স্ট্রোকে মাওলানা মোস্তাক আহমেদ কুতুবী আলকাদেরী (৫৫) নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার চট্টগ্রাম নগরের বাসা থেকে মাদরাসায় যাওয়ার পথে মাওলানা মোস্তাক আহমেদ কুতুবী হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
তিনি বোয়ালখালী উপজেলার খিতাপচর আজিজিয়া মাবুদিয়া আলিম মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
রাজশাহীতে হিট স্ট্রোকে দিলীপ বিশ্বাস (৩৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান তিনি। তিনি রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার দামকুড়া থানার কাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছেন, দিলীপ বিশ্বাস সুস্থ-স্বাভাবিক ছিলেন। রবিবার হঠাৎ করেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মুহূর্তের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। তারা ধারণা করছেন, বৈশাখের এই তীব্র গরমের কারণে হিট স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে।
তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে যশোরে, তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস
নরসিংদীতে হিটস্ট্রোকে আদালত প্রাঙ্গণে সুলতান উদ্দিন মিয়া (৭২) নামে এক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দুপুর ৩টার দিকে তার মুত্যু হয়। তিনি নরসিংদী কোর্টে আইনজীবীর সহকারী (মুহুরি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, নিহত সুলতান উদ্দিন মিয়া সকালে প্রতিদিনের মতো বাসা থেকে বের হয়ে নরসিংদী কোর্টে যান। কোর্টে কাজ করার সময় দুপুরে তার বুকে ব্যথা অনুভব হয়। পরে সে আদালতের মসজিদের সামনে এলে পড়ে যান। লোকজন উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাদারীপুরে তীব্র তাপপ্রবাহে অসুস্থ হয়ে দুইজন মারা গেছেন। নিহতদের একজন খুচরা ব্যবসায়ী ও অপরজন কৃষক।
রবিবার বেলা আড়াইটার দিকে জেলার কালকিনি উপজেলার পশ্চিম শিকারমঙ্গল এলাকায় ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী শাহাদাত সরদার (৫৫) ও ২টার দিকে ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামের মোসলেম ঘরামি (৬০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলাউল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রচণ্ড গরমে দুইজন মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় হিটস্ট্রোকে হাবিবা রিক্তা নামে এক স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত স্কুল শিক্ষিকা হাবিবা রিক্তা টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্নি বাজার এলাকার জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী। সে উপজেলার ৯নং উত্তর বর্নী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
হাবিবা রিক্তার স্বামী জাহিদুল ইসলাম বলেন, শনিবার (২৭ এপ্রিল) তিনি রোদের মধ্যে গরমে ধান সিদ্ধের কাজ করেছিলেন। রবিবার (২৮ এপ্রিল) বাড়িতে হঠাৎ করে হাবিবা রিক্তা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর তাকে গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
স্বাঅলো/এস