spot_img

একটি গরু থেকে খামার, দুধ বিক্রি করে বছরে আয় ১৫ লাখ টাকা

হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট: জেলার পাটগ্রামে একটি গাভী থেকে পর্যায়ক্রমে খামার গড়ে তুলেছেন উদ্যোক্তা মোহাম্মদ গোলাম কাদের।

তার খামারে এখন ২৮টি গাভী ও দুইটি ষাঁড় রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। অন্যান্য আনুসঙ্গিক খরচ বাদে বছরে খামার থেকে আয় প্রায় ১৫ লাখ টাকা।

উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নে প্রত্যন্ত খেংটি গ্রামের প্রধানবাড়ী এলাকায় খামার গড়ে সাফল্য পেয়েছে এ কৃষক পরিবারটি।

গোলাম কাদেরের বাড়ির পাশে তার জিম ডেইরি ফার্মে গিয়ে দেখা গেছে, তার খামারের রয়েছে হলিস্ট্রিয়ান ও ফ্রিজিয়ান জাতের গরু। প্রতিটি গরুর ওপর বৈদ্যুতিক পাখা লাগানো। খামারের গরুর সার্বক্ষণিক পরিচর্যার জন্য রয়েছেন তিনজন শ্রমিক।

লালমনিরহাট বৃষ্টি কামনায় সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায়

কাদের জানান, বর্তমানে প্রতিদিন ছয়টি গাভী মোট ১২০ লিটার দুধ দেয়। স্থানীয় বাজারে কিছু দুধ বিক্রি করেন। অবশিষ্ট দুধ শহেরর মিল্ক ভিটা কোম্পানির কাছে বিক্রি করেন। প্রতি বছর ২২ থেকে ২৫ লাখ টাকার দুধ বিক্রি করতে পারেন। গরুর খাবার, চিকিৎসা ও শ্রমিক এবং অন্যান্য ব্যয় বাদে আয় হয় ১৫ লাখ টাকা।

গরুর খামার দেয়ার পেছনের গল্প জানাতে গিয়ে কাদের বলেন, ২০১৫ সালে সন্তানের পুষ্টির চাহিদা পূরণে স্থানীয় বাজার থেকে প্রতিদিন গাভীর দুধ কিনে আনতাম। এতে কিছুটা সমস্যা হতো। এ কারণে বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে ৮৪ হাজার টাকা মূল্যে একটি ফ্রিজিয়ান গরু কিনি। ওই গরু থেকে প্রতিদিন ছয় কেজি দুধ পাওয়া যেতো। এত দুধ খেয়ে শেষ করা যেতো না। এ কারণে একপর্যায়ে খামার করার চিন্তা মাথায় আসে। পর্যায়ক্রমে আজকের এ খামার। এখনো পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি। সরকারি সহায়তা পেলে আরো ভালো করা সম্ভব।

গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় খামারিদের অসহায়ত্ব নিয়ে তিনি বলেন, যদি গো-খাদ্যের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া যায়, তাহলে আমার মতো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সফল হতে পারবে। কারণ যখন ৭০০ টাকা বস্তা ছিলো, তখন দুধের দাম ছিলো ৫০ টাকা। এখন এক হাজার ৩০০ টাকা বস্তা, এখনো দুধের দাম ৫০ টাকা। তাহলে আমরা কীভাবে টিকে থাকবো।

উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা.শ্যামল চন্দ্র রায় বলেন, জিম ডেইরি ফার্ম দেখেছি। গরুগুলোও ভালো স্বাস্থ্যবান। সরকারি সহায়তা পাওয়ার যোগ্য। খামারটি বেশ সম্ভাবনাময়। সরকারি সহায়তা পেলে আরো ভালো করতে পারে।

সম্প্রতি জিম ডেইরি ফার্ম পরিদর্শনে যান উপজেলার প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা ডা. মোতাহারুল ইসলাম।

আর্থিক সযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত মোহাম্মদ গোলাম কাদেরকে সরকারি কোনো আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়নি। তবে ইতোমধ্যে তার খামারের শেড নির্মাণ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পক্ষ থেকে সব সময় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য
Related

দুই মামলায় জামায়াত ও বিএনপি নেতাসহ ১৮ জন গ্রেফতার

হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট: জেলায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার...

নিজেকে রাজাকার দাবি করে স্বেচ্ছায় ২ ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ

হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট: জেলার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক...

তিস্তা নদী থেকে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার

হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট: জেলার আদিতমারী উপজেলার তিস্তা নদীতে ভেসে এলো...

লালমনিরহাটে দেখা দিচ্ছে গরুর ল্যাম্পি স্কিন রোগ

হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট: লালমনিরহাটে গ্রামে গ্রামে গবাদি পশুর (গরু)...