যশোরে লাগাতার তাপদাহে জনজীবন দুর্ভোগে

নিজস্ব প্রতিবেদক: গরমের কারণে রাস্তাঘাটে মানুষ কম বের হচ্ছেন যশোরে লাগাতার গরমে চরম দুর্ভোগে জনজীবন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। এ অবস্থায় বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। খুব প্রয়োজন না হলে রোদে বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তাররা।

এদিকে, যশোরে লাগাতার তাপদাহের কারণে জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জরুরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে ভাবছে।

যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। আজকের অবস্থাও সেদিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে আমরা দ্রুত কিছু স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কতা বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করতে যাচ্ছি। লোকজন যেন এই রোদে ঘর থেকে বের না হয়। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করে ইত্যাদি।

যশোর বিমানবন্দর মতিউর রহমান ঘাঁটিস্থ আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) যশোরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৪০ শতাংশ।

বেলা ৩টা নাগাদ তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪০ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৭ এপ্রিল ছিলো ৪০ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১৬ এপ্রিল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সকাল থেকেই ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। এ অবস্থায় কাজে বেরিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।শহরের পুরাতন কসবা কদমতলা এলাকায় যাত্রীর জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন রিকশাচালক শ্রীরাম দাস। সকাল আটটায় রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন। বললেন, রোদের দাপটে লোকজন বাইরে কম বের হচ্ছে। তাই আয় রোজগার কমেছে। প্রতিদিন রিকশা মালিককে আড়াইশ টাকা, নিজের দুপুরের খাবার, চা নাশতার খরচ মিলিয়ে আগে ৩৫০ টাকা আয় করতে হবে। এরপর সংসার খরচের জন্য যা হয়।

চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড বাজারে বাঙ্গি বিক্রি করেছিলেন যশোর সদরের নরেন্দ্রপুর এলাকার শরিফুল ইসলাম। তিনি ভ্যানে করে এ বাজার সে বাজারে বাঙ্গি বিক্রি করছেন ৪০ থেকে ১০০ টাকা দরে। তিনি জানান, গরমে লোকজন বাইরে কম, তাই বেচাবিক্রি বেশি একটা হচ্ছে না।

এদিকে গরমের কারণে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। যশোর জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে পাঁচ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছেন ২৫ রোগী। যার মধ্যে ১১ জনই শিশু রোগী। গতকাল মোট রোগী ছিলো ১১ জন। আজ নতুন করে (সকাল ১০টা পর্যন্ত) ভর্তি হয়েছেন ১৪ জন। এ তথ্য দিয়েছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স হোসনেআরা বেগম।

এদিকে, লাগাতার তাপদাহের কারণে রোদের মধ্যে বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিচিত্র মল্লিক। তিনি বলেন, এই গরমে ডায়রিয়া, বমি, পেটে ব্যথার রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছে। রোগীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি।

জানতে চাইলে যশোর মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক ডা. আলাউদ্দিন আল মামুন বলেন, এই সময়ে ডায়রিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি-কাশি, পক্স, হিট স্ট্রোক, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি হতে পারে। প্রচণ্ড গরম থেকে মুক্তি পেতে কেউ যেন ডিপ ফ্রিজের পানি পান না করে। এ সময় প্রচুর পানি, ডাবের পানি, দেশি ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন।দিনমজুর বিশেষ করে কৃষকরা যেন সকাল ১১টার মধ্যে এবং বিকলে তাপমাত্রা কমলে কাজ করেন সেই পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তাররা

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

যশোরে মহান মে দিবস পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে যথাযথ মর্যাদার মধ্য দিয়ে ১৩৮তম মহান...

যশোর সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিপুলের মনোনয়নপত্র জমা

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী...

যশোর জেনারেল হাসপাতালে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর জেনারেল হাসপাতালের চতুর্থ তলার শিশু ওয়ার্ডে...

খুলনাসহ যেসব বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি

ঢাকা অফিস: খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার...