কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুরে কালিয়ারই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চেয়ারম্যান হওয়াতেই স্কুল করেন না। দুই সপ্তাহের কোনো একদিন বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজিরা খাতায় বিগত দিনের স্বাক্ষর করে চলে আসেন।
বিদ্যালয়ে না গিয়েই তিনি দীর্ঘদিন ধরে বেতন ভাতার সরকারি অংশ অবৈধভাবে উত্তোলন করে চলেছে।
তার অবহেলার কারণে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারীর অধীনে চলতে হয় শিক্ষকদের। এনিয়ে শিক্ষকসহ অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষেভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ১ নভেম্বর সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মুনজুর রহমান মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কালিয়ারই এসবিএল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের শুরুতেই তিনি ধনাঢ্য হওয়ায় নিজ অর্থে শিক্ষাথীদের স্কুল ড্রেস ও আসবাবপত্র দিয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের নজরে আসেন। কিন্তু তার আসল চরিত্র ফুটে উঠে তখনই, যখন তিনি ১৫ দিন পর পর বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা শুরু করেন। তার অনুপস্থিতির সুযোগে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আজিবর রহমান মাতব্বর হিসেবে কাজ শুরু করেন। একারণে আজিবার রহমান কাউকে তোয়াক্কা না করে শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১ ফেব্রুয়ারি বার্ষিক শিক্ষা সফরের দিনে ওই অফিস সহকারীর হাতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনিসুর রহমান লাঞ্ছিত হন। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কর্মী আমিনুর রহমানকে দিয়ে শ্রেণি কক্ষের পাঠদান করানো হচ্ছে। এনিয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করলেও প্রধান শিক্ষক ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও চেয়ারম্যান হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।
অভিভাবক আব্দুস সাত্তার অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক এসএম মুনজুর রহমান বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আজিবর রহমানের সাথে যোগসাজশে অভিভাবকদের গোপন করে আব্দুল আজিজ নামের এক ব্যক্তিকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনোনীত করেন। ওই প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন পদে কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক জমি লিখে নিয়েছেন। তার দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী রজব আলী রাতে বিদ্যালয় পাহারা না দিয়ে দিন রাত তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাজে সময় ব্যয় করে বেতনের সরকারি অংশ অবৈধভাবে উত্তোলন করে চলেছেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব ঘটনার প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে মকবুল, মনিরুল ইসলামসহ এলাকাবাসী গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক এসএম মুনজুর রহমান মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তুহিন হোসেন বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্বাআলো/এস