সম্পাদকীয়: বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৩২ শতাংশ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী পরিবেশ দূষণ। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। দেশের অর্থনীতি ও এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পরিবেশ দূষণে দেশের জিডিপির ৮ শতাংশ নষ্ট হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজের অগ্রাধিকার ঠিক করে ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এতে পরিবেশ, বায়ু ও সব ধরনের দূষণ নিয়ন্ত্রণে জোর দেয়া হয়েছে।
পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে দেশের মানুষের জীবনে সংকট বাড়ছে। মাটি, পানি, বায়ু, শব্দসহ সব ধরনের দূষণই ঘটছে এখানে। পরিবেশ দূষণ যে মানুষের জীবনে মারত্মক প্রভাব ফেলে সেটা অতীতে বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে।
বন, নদী, মাটি, বায়ু রক্ষা করার কোনো বিকল্প নেই। দেশে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। তবে উন্নয়ন কতটা পরিবেশ বান্ধব তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অবশ্যই উন্নয়ন করতে হবে, তবে উন্নয়ন হতে হবে পরিবেশ রক্ষা করে। পরিবেশ যদি না টেকে তবে উন্নয়নকে টেকসই করা যাবে না।
বায়ু দূষণ কমাতে আগামী ১০০ দিনে রাজধানীর আশপাশের ৫০০ ইটভাঁটা গুঁড়িয়ে দেয়া হবে। মন্ত্রণালয় আরো কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। এটা আমাদেরকে আশাবাদী করে। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, পরিবেশ দূষণের জন্য অভিযোগের
আঙুল বেশি ওঠে একশ্রেণির প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। নদ-নদী দখল, বন ধ্বংস, পাহাড় কাটা, অবৈধ ইটভাটা প্রভৃতি ইস্যুতে তাদের ভূমিকায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যাবে কিনা সেটা একটা প্রশ্ন। দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজের অগ্রাধিকার ঠিক করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ১০০ দিনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সেটা সফল হোক- এটাই আমাদের চাওয়া।
কোনো একক কর্তৃপক্ষের পক্ষে পরিবেশ দূষণ রোধ করা কঠিন। পরিবেশ রক্ষা করতে হলে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেছেন, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয়ে একটি ‘মিনিস্টারিয়াল ম্যাপিং’ করা হবে। আমরা আশা করবো, কাজটি দ্রুত করা হবে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কেবল অঙ্গীকার করলেই হবে না, সেটা
বাস্তবায়ন করা জরুরি। পাশাপাশি সব স্টেকহোল্ডারকে এক ছাতার নিচে আনা জরুরি। সব স্টেকহোল্ডারকে যার যার জায়গা থেকে জোরালো আওয়াজ তুলতে হবে।
স্বাআলো/এস