প্রান্তিক মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে

সম্পাদকীয়: সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ পান না ৬৯ শতাংশের বেশি রোগী। ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ৬৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ রোগীকেই বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয়। জন্মের পরপরই মায়ের দুধ থেকে বঞ্চিত হয় দেশের ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ শিশু।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্ল্যানিং মনিটরিং অ্যান্ড রিসার্চ (পিএমআর) আয়োজিত এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনটি সেশনে প্রকাশ করা হয় বিষয়ভিত্তিক ১৪টি গবেষণা প্রতিবেদন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রশ্নপত্রের ভিত্তিতে এই গবেষণাগুলো করা হয়।

সরকারি হাসপাতালে ওষুধ পান না ৬৯ শতাংশ রোগী

দেশের হাসপাতালগুলোয় সংক্রমণ রোধ ও নিয়ন্ত্রণের (আইপিসি) অবস্থা বিষয়ক এক গবেষণায় বলা হয়, বেশিরভাগ হাসপাতালে আইপিসি কমিটি আছে। কিন্তু অধিকাংশ কমিটি কার্যকর নয়। অধিকাংশ হাসপাতালেই নেই আইপিসির জন্য নির্দিষ্ট জনবল। সরকারি ৬০ শতাংশ হাসপাতালে আইপিসি ব্যবস্থাপনা নেই। আর বেসরকারি হাসপাতালের ৫০ শতাংশে নেই এই ব্যবস্থাপনা। ফলে হাসপাতাল থেকে যেসব রোগের সংক্রমণ হয়, সেগুলো বাড়বে। এই সংক্রমণ মারাত্মক ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়।

সরকার চায় প্রান্তিক মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে। নাগরিকদের সুলভে স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য দেশে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়, কিন্তু নানান কারণে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা দেয়া সম্ভব হয় না।

দেখা যায় হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক থাকেন না, যন্ত্রপাতি থাকে না। হাসপাতালগুলোতে সংশ্লিষ্ট সব পদ থাকে কিন্তু লোকবল নিয়োগ দেয়া হয় না। যদিও বা নিয়োগ দেয়া হয় কিন্তু অনেক চিকিৎসক কর্মক্ষেত্রে থাকেন না। চিকিৎসা কেন্দ্রে যদি চিকিৎসকই না থাকেন তাহলে মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাবে কিভাবে- সেটা একটা প্রশ্ন।

দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষের চিকিৎসার জন্য ভরসা হচ্ছে সরকারি হাসপাতাল। বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে এমন অনেক এলাকা আছে যেখানে সরকারি হাসপাতাল আছে, অথচ রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নেয়ার জন্য দূর-দূরান্ত যেতে হয়। কারণ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায় না। সেবা না পেয়ে ছোটখাটো সমস্যাতেই রোগীদের বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হয়।

এজন্য সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় প্রান্তিক দরিদ্র মানুষকে। আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় তারা বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে সেবা নিতে পারেন না।

আমরা বলতে চাই, জনসাধারণের স্বাস্থ্যসেবার কথা চিন্তা করে উল্লিখিত হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করতে হবে। অপারেশন থিয়েটার চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে এমনটাই আমারা দেখতে চাই।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি দেখবে কে

সম্পাদকীয়: পলিথিনে সয়লাব সাতক্ষীরার পাইকগাছা হাট বাজার। ওই সব...

মহান মে দিবস

সম্পাদকীয়: ফরাসী বিপ্লবের শতবার্ষিকীতে ১৮৯০ সাল থেকে শিকাগো প্রতিবাদের...

কিশোর গ্যাং দমনে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়িত হোক

সম্পদকীয়: মাদক নির্মূল ও কিশোর গ্যাং দমনে কঠোর হওয়ার...

হিট স্ট্রোকে আশংকাজনক হারে মৃত্যু বাড়ছে

সম্পাদকীয়: হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে যশোরের একজন শিক্ষকসহ দেশে...