বায়ুদূষণ রোধে ১২ নির্দেশনা দিয়েছে সরকার

ঢাকা অফিস: বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় গত বৃহস্পতিবারও প্রথম স্থানে ছিলো রাজধানী ঢাকার নাম। বায়ুদূষণের তালিকায় বারবার শীর্ষে আসায় তা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের ১২টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। তবে বাস্তবায়নে সমন্বিত উদ্যোগ না থাকলে এসব নির্দেশনা কোনো কাজে আসবে না বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদেরা।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। সেই আদেশে ইউটিলিটি লাইন মেরামত, দোকানপাটের ধুলা ঝাড়ু দিয়ে রাস্তায় না ফেলাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব (সিটি করপোরেশন-১) মোহাম্মদ সামসুল ইসলামের স্বাক্ষর করা এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি দেশের সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব (নগর উন্নয়ন) নুরে আলম ছিদ্দীকী বলেন, বায়ুদূষণ রোধে আমরা বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এগুলো বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ না করলে এসব নির্দেশনার কোনো সুফল আসবে না বলে জানিয়েছেন নগরবিদ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পর্যাপ্ত অর্থ দেবে জাতিসংঘ 

তিনি বলেন, দূষণের দিক দিয়ে আমরা বারবার কেনো শীর্ষে থাকি তা নিয়ে সরকার কমবেশি অবগত। দেশের মোট উন্নয়নকাজের ৬০-৭০ শতাংশই সরকারিভাবে করা হয়। সেখানে সব প্রকল্পেই পোড়ামাটির ইট ব্যবহার করা হচ্ছে।

অন্যান্য নির্মাণ উপকরণ উৎপাদন, পরিবহন ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে নীতিমালা কেউ মানছে না। সিটি করপোরেশনগুলো তাদের তথ্যমতে, সংস্থাগুলো ৬০ শতাংশ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে থাকে। বাকি ৪০ শতাংশ বর্জ্য থাকে ব্যবস্থাপনার বাইরে। এ বিশাল পরিমাণ বর্জ্য পরিবেশদূষণ করে থাকে। এ ছাড়া জনগণ তার আঙিনা পরিষ্কারের বিষয়েও দায়বদ্ধ না। তারা নিজের জায়গাটুকু ঝাড়ু দিয়ে ময়লা রাস্তায় ফেলে দেয়। ফলে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ না করলে কোনো সুফল আসবে না।

স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাস্তার সংস্কারকাজ, ড্রেনের নর্দমার বর্জ্য এবং বিভিন্ন মার্কেট বা দোকানপাটের ময়লা-আবর্জনা ঝাড়ু দিয়ে রাস্তায় না ফেলার জন্য পরিবেশমন্ত্রী স্থানীয় সরকার বিভাগে গত মাসের শুরুর দিকে একটি চিঠি দেন। এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে বলা হয়, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার আওতাধীন পরিচালিত নির্মাণকাজের সময় ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণে পানি ছিটানো, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে পরিবহন ও মজুত করা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ধূলিদূষণ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত বেষ্টনীর ব্যবহার করতে হবে।

বায়ু দূষণ নিয়ে সুরক্ষামূলক পরামর্শ দিচ্ছে পরিবেশ অধিদফতর

রাস্তার পার্শ্ববর্তী ড্রেন বা ড্রেন থেকে বর্জ্য তুলে উন্মুক্তভাবে ফেলে না রেখে দ্রুত পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তার উন্নয়নকাজ যথাসম্ভব রাত্রিকালীন সম্পন্ন করা ও নির্ধারিত স্থানটি বেষ্টিত রেখে দৈনিক একাধিকবার পানি ছিটানোর নির্দেশনাও দেয়া হয় তখন।

নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, একটা শহরের পরিকল্পনায় যদি গলদ থাকে, তাহলে দূষণ রোধ করা কঠিন। আমাদের শহরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। সেখানে শক্ত হাতে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করলে কোনো কিছুই কাজে আসবে না।

স্বাআলো/এসআর

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

দেশে হিট স্ট্রোকে ৭ জনের মৃত্যু

ঢাকা অফিস: তীব্র তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।...

‘দেশে কোরবা‌নির পশুর ঘাটতি নেই

ঢাকা অফিস: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান জানিয়েছেন,...

যশোরসহ ৫ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

ঢাকা অফিস: তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে যশোরসহ দেশের পাঁচটি জেলার...

তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে যশোরে, তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

ঢাকা অফিস: চলতি এপ্রিল মাসজুড়ে যশোরের ওপর দিয়ে তীব্র...