ঢাকা অফিস: রাজধানীর বেইলি রোডে আগুন লাগা গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ২০১৯ সালে অভিযান চালিয়েছিলো রাজউক। সে সময় ভবন তৈরিতে অনিয়মের কারণে ওই ভবনের অননুমোদিত অংশ ভেঙে দেয়া হয়েছিলো। পাশাপাশি ভবনটিতে ছিলো না রাজউকের অকুপেন্সি সার্টিফিকেট বা ব্যবহার সনদ।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে সাত তলা ওই ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভবনটিতে অগ্নিনির্গমন পথ ছিলো না। সিঁড়িতে গ্যাস সিলিন্ডারসহ নানা ধরনের মালামাল রাখা ছিলো। নিচতলায় আগুন লাগলে ওই সিঁড়ি দিয়ে নামতে পারেনি মানুষ। আটকা পড়ে ধোঁয়ার বিষক্রিয়ায় অধিকাংশ মানুষের মৃত্যু হয়।
অপরদিকে রাজউক জানিয়েছে, ভবনটিতে অফিসের অনুমোদন নেয়া হয়েছিলো। রেস্তোরাঁর জন্য কোনো অনুমোদন ছিলো না। কিন্তু গ্রিন কোজির বিভিন্ন ফ্লোরে রেস্তোরাঁ ও খাবারের দোকান ছিলো। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নিচতলার চা-কফির দোকান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছিলো।
বেইলি রোড আগুন: বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট
রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম রবিবার (৩ মার্চ) গণমাধ্যমকে জানান, নিয়ম ভঙ্গ করায় ওই ভবনকে নোটিস দেয়া হয়েছিলো, পরে সেখানে অভিযানও চালানো হয়।
রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, ওই ভবনটি অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নেয়নি। এছাড়া তারা কিছু আনঅথোরাইজড কনস্ট্রাকশন করেছিলো। এ কারণে আমরা অভিযান চালিয়ে ওই অংশটুকু ভেঙে দিই।
ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী, ভবন নির্মাণের পর ব্যবহার বা বসবাসের আগে ব্যবহার সনদ বা অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নিতে হয়। একটি ভবন সঠিকভাবে তৈরি হয়েছে কি-না, ভবনটি ব্যবহারের জন্য নিরাপদ কি-না, সেটি নিশ্চিত করার জন্যই দেয়া হয় অকুপেন্সি সার্টিফিকেট বা ব্যবহার সনদ।
বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় মামলা
রাজউক আরো জানায়, ২০১১ সালে গ্রিন কোজি কটেজ বেইজমেন্টসহ আট তলার অনুমোদন নেয়া হয়। আবাসিক কাম বাণিজ্যিক অনুমোদন নেয়া ওই ভবনটির নিচ তলা থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক এবং উপরের অংশ আবাসিক ব্যবহারের অনুমোদন নেয়া হয়েছিলো।
২০১৩ সালে ভবনের কাজ শেষ হয়। রাজউকের অকুপেন্সি সার্টিফিকেট না নিয়েই ওই ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলো। এ কারণে ভবন মালিককে ২০১৯ সালে নোটিস দেয়া হয়। ওই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালানো হয়। পাশাপাশি অবৈধভাবে গড়ে তোলা ভবনের কিছু অংশ ভেঙে দেয়া হয়।
স্বাআলো/এসআর