মিয়ানমারে সংঘাত: ওপারে গুলি, এপারে আতঙ্ক

জেলা প্রতিনিধি, বান্দরবান: মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াইয়ে গোলাগুলি, মর্টারশেল ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের পুরো সীমান্ত এলাকা।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় এখন প্রতিনিয়ত গোলাগুলি ও মর্টারশেলের বিকট শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে।

বিশেষ করে তুমব্রু এলাকার জলপাইতলীতে দুজনের মৃত্যুতে ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনেকে নিজ ঘর ও গ্রাম ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র ও আত্মীয়ের বাড়ি চলে যাচ্ছেন।

ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকার বাসিন্দা জানান, মিয়ানমারের তুমব্রু রাইট ক্যাম্প সীমান্ত চৌকিটি বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার লোকালয়ের একদম কাছাকাছি। ঢেঁকিবনিয়া সীমান্ত চৌকি থেকে বাংলাদেশের লোকালয় প্রায় ৫০০ মিটার দূরে। এ কারণে তুমব্রু রাইট ক্যাম্পে গোলাগুলির সময় বাংলাদেশের বসতঘরে গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়েছে।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে বিজিপির ১১৭ সীমান্তরক্ষী

গত কয়েকদিন ধরে সীমান্তের ওপারে প্রচুর গোলাগুলি হচ্ছে আর গোলাগুলির ভয়ে আমাদের পরিবারের সবাই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজীজ বলেন, সীমান্তের পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কখনো একনাগাড়ে কখনো থেমে থেমে গুলি হচ্ছে। আর ওপারের গুলি আর মর্টারশেল এসে আমার ইউনিয়নের কয়েকজনের মৃত্যুর পাশাপাশি কয়েকজন আহত হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমার ইউনিয়নের ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং সাধারণ জনগণকে সেখানে গিয়ে আশ্রয় নেয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

বিজিবি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমারের ১৪ পুলিশ

তিনি বলেন, মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে ঘুমধুম, তুমব্রু ও কোনাপাড়ার প্রায় শতাধিক জনসাধারণ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

সীমান্তের এই সংঘাত ঘিরে ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাই বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ২৪০ পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন।

প্রসঙ্গত: গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সশস্ত্র বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের সংঘর্ষ বেড়ে গেছে আর তাদের সংঘর্ষের মধ্যে নিক্ষিপ্ত মর্টারশেলে গত ৫ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রুর জলপাইতলীতে দুইজনের মৃত্যু হয়।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী, যাবেন আপিলে

ঢাকা অফিস: দেশের অধিকাংশ এলাকার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে...

আরো কমলো সোনার দাম

ঢাকা অফিস: চরম অস্থিতিশীলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে সোনার বাজারে। চলতি...

কাল যশোরসহ ২৭ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

ঢাকা অফিস: সারাদেশে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০...

বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষ, নিহত ২

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার: জেলার ঈদগাঁও উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস ও...