রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা: শিক্ষকরা নারাজ, খুশি অভিভাবকরা

ঢাকা অফিস: বছরের শুরুতে প্রকাশিত ছুটির তালিকায় পবিত্র রমজান মাসজুড়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার কথা ছিলো। হঠাৎ তাতে সংশোধনী এনেছে সরকার।

শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ছুটির এ বদল নিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রোজার প্রথম ১০ দিন প্রাথমিক এবং ১৫ দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখা হবে। হঠাৎ ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্তে ‘নারাজ’ শিক্ষকরা।

শিক্ষকদের অভিযোগ, বছরের শুরুতে ৭৬ দিন ছুটি রেখে সরকার তালিকা প্রকাশ করেছে। তখন এটা নিয়ে শিক্ষকদের ‘বেশি ছুটি’ দেয়া হচ্ছে বলে আমলারা নানান অভিযোগও তোলেন। অথচ তার মধ্য থেকে কাঁটছাট করে ছুটি কমিয়ে ফেলা হয়। আবার অবকাশ বিভাগের কর্মচারী হিসেবে অবসরের পর এর জন্য শিক্ষকরা আর্থিক সুবিধাও কম পান।

তবে ছুটি বাতিল করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিভাবকরা। কেউ কেউ এটিকে ‘ইতিবাচক’ বলছেন। আবার অনেক অভিভাবক রোজার মধ্যে ‘ছুটি থাকলেই ভালো হতো’ বলেও মন্তব্য করেছেন।

রমজান মাসে খোলা থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, শৈত্যপ্রবাহের কারণে অনেক এলাকায় স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছিলো। এতে শিখন ঘাটতি হয়েছে। নতুন কারিকুলামে হাতে-কলমে শিক্ষায় জোর দেয়ায় শিখন ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য রমজানে ছুটি কিছুটা কমানো হয়েছে।

এক স্কুলছাত্রীর বাবা ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, রোজার মধ্যে সব অফিস খোলা থাকে। স্কুল বন্ধ রাখার প্রয়োজন দেখি না। রোজা রেখে সব কাজ করতে পারাটাই প্রকৃত সিয়াম সাধনা। আমার মেয়েটা দুই বছর ধরে রোজা রাখে। আমি ওকে রোজা রেখে ক্লাস করতেই উৎসাহিত করি।

প্রাথমিক শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক মাহবুবর রহমান বলেন, আমরা শিক্ষকরা অবকাশ সুবিধার বিভাগে চাকরি করি। এখানে অবকাশ সুবিধা রয়েছে বলেই চাকরি শেষে আমরা অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের চেয়ে কম সুবিধা পাই। অথচ দিনশেষে অবকাশের বিষয়টি থাকে না। শিক্ষকতা মানে সারা বছর শুধু স্কুলে উপস্থিত হওয়া নয়।

তিনি বলেন, ক্লাস নেয়া ও শিক্ষার্থীদের শেখার বিষয়টি আনন্দময় হওয়া উচিত। এটা জোর করে চাপিয়ে দিয়ে আদায় করা সম্ভব নয়। আমরা রোজা রেখে ক্লাসে যাবো, যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবো। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থী ধর্মীয় কারণে ছোটবেলা থেকেই রোজা রাখার চেষ্টা করে। অনেকে হাফ বেলা রোজা রেখে হয়তো আর পারে না। এমন অবস্থায় তারা স্কুলে আসতে চায় না। স্কুলে উপস্থিতি খুবই কম থাকে। ওই সময় যা শেখানো হবে, তা থেকে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বলেন, মন্ত্রণালয় সার্বিক দিক বিবেচনা করেই স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করার চেয়ে ক্লাসে শিক্ষকদের মনোযোগ দেয়া উচিত। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের ভূমিকাটা বেশি। সেদিকেও তাদের নজর রাখতে হবে।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

জানতাম না এত বড় দায়িত্ব নিতে হবে: শেখ হাসিনা

ঢাকা অফিস: আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী...

যারা একবেলা ভাত খেতে পারতো না, তারা এখন চারবেলা খায়: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্রামের অর্থনীতি পাল্টে...

বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতেই সুরক্ষিত: খাদ্যমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, শেখ হাসিনা...

র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র

ঢাকা অফিস: মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল...