ঘনিয়ে আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নভেম্বর তফসিল ঘোষণা হলে আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে রাজপথ দখলের লড়াইয়ে সাংগঠনিক শক্তির মহড়া দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সরকারবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত রুখে দিতে গোটা অক্টোবর মাস জুড়েই রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশ জনসভায় রূপ দেবে আওয়ামী লীগ।
আর বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি দিলে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশের মাধ্যমে রাজপথ দখল রাখার কৌশল নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বার্তা দিয়ে ভোট যুদ্ধে শামিল হবে।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, পুরো অক্টোবর মাসজুড়েই বিভিন্ন কর্মসূচিতে রাজপথে শক্তির মহড়া দেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
এ লক্ষ্যে আগামী ৩ অক্টোবর ঢাকার প্রবেশমুখ আমিনবাজারের এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। ৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হবে। এ জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে দলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেবেন।
আগামী ৫ অক্টোবরও কাঁচপুরে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।
৭ অক্টোবর ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে। এ উপলক্ষে এয়ারপোর্টের সামনে এভিয়েশন মাঠে এক সুধী সমাবেশ হবে। সেখানে দুই লক্ষাধিক লোকের সমাগম করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
১০ অক্টোবর মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল লাইনের উদ্বোধন হবে এবং পদ্মা সেতুতে প্রথম রেল চলাচল উদ্বোধন হবে। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কপথে মাওয়াতে যাবেন। মাওয়াতে সুধী সমাবেশ হবে। তাই হানিফ ফ্লাইওভারের প্রবেশমুখ থেকে মাওয়া পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাবে। এরপর ভাঙ্গায় অনুষ্ঠিত জনসভায় বক্তব্য দেবেন তিনি। ভাঙ্গা থেকে টুঙ্গিপাড়ায় রওয়ানা হয়ে নিজ বাসভবনে রাত্রিযাপন করবেন এবং পরের দিন ঢাকায় ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া তারিখ চূড়ান্ত না হলেও গণভবনে একটি নারী সমাবেশ করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেখানে ১০-১৫ হাজার নারী প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। ১৬ অক্টোবর আইনজীবীদের বার কাউন্সিলের উদ্বোধন করা হবে সে উপলক্ষে সেখানে আইনজীবী মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
২৩ অক্টোবর মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন হবে। এ উপলক্ষে মতিঝিলে সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া ২৮ তারিখে চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন হবে রয়েছে। সেখানেও বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ পুরো মাসব্যাপী আরো অনেক কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করে রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম অক্টোবরজুড়ে এসব কর্মসূচির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পুরো অক্টোবর মাসজুড়ে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচিতে রাজপথে থাকবো। বিএনপি-জামায়াতের সরকারবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের আন্দোলন মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি। আমাদের ঢাকা প্রস্তুত রয়েছে। তাদের যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে রাজপথে আছি। এ লক্ষ্যে গত তিন মাস থেকে ঢাকা বিভাগীয় অন্তর্গত আমাদের সব সংগঠনকে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, গোটা অক্টোবর মাসজুড়েই আমরা রাজপথে কর্মসূচি নিয়ে থাকবো। বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত। তারা অতীতের মতো আগুন সন্ত্রাস, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।
এদিকে রবিবার বিকাল তিনটায় বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় এক যৌথসভার আহবান করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের এই যৌথসভায় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগসহ ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এই যৌথসভা থেকেই এসব কর্মসূচি সফল করার জন্য বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
স্বাআলো/এসএ