সীমান্তের ২৪০ পরিবারকে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ

জেলা প্রতিনিধি, বান্দরবান: বান্দরবান-মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান পরিস্থিতির কারণে জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ২৪০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাহ মুজাহিদ উদ্দিন।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক (ডিসি) এ নির্দেশ দেন।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাহ মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, বান্দরবান-মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান পরিস্থিতির কারণে ছাত্রছাত্রী ও সীমান্তে অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী ২৪০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সীমান্তবর্তী স্কুলগুলো বন্ধ ও সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সজাগ থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বিকেল ৩টায় নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত পয়েন্ট পরির্দশন করে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে যান তারা। পরে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে জলপাইতলী এলাকা যান তারা। সেখানে মিয়ানমারের ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে নিহত হোসনে আরার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন ডিসি। সেই সঙ্গে প্রশাসনে পক্ষ থেকে হোসনে আরার পরিবারকে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেন। পরির্দশন শেষে সার্বিক অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জেলা প্রশাসক।

স্থানীয়রা জানায়, সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। এরইমধ্যে সীমান্ত লাগোয়া দেশটির সরকারি বাহিনীর তমব্রু রাইট ক্যাম্প দখলে নিয়েছেন বিদ্রোহীরা। বর্তমানে ঢেকুবনিয়ে বিজিপি ক্যাম্প দখলে নিতে উভয় পক্ষের লড়াই চলছে। তাদের এ সংঘাতে ব্যবহার করা গুলি ও মর্টার শেলের গোলা সীমান্ত অতিক্রম করে এসে পড়ছে বাংলাদেশের ঘুমধুম এলাকার বিভিন্ন লোকালয়ে।

গত সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলি এলাকায় এক বাংলাদেশি নারীসহ দুইজন নিহত ও আহত হয়েছে অন্তত তিনজন। বিদ্রোহীদের কাছে টিকতে না পেরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) ১১৩ সদস্য।

এ অবস্থায় সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের নিরাপদে আশ্রয় দিতে উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সোমবার রাত থেকে ঘুমধুমের কোনাকপাড়া, জলপাইতলি ও ভাজাবনিয়া এলাকার বাসিন্দাদের ওই আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এদিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গোলায় নাইক্ষ্যংছড়িতে সৈয়দ আলম (৩৮) নামের আরও এক বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের পশ্চিমকুল পাহাড়পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সৈয়দ আলম ওই এলাকার কাদের হোসেনের ছেলে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আনোয়ার হোসেন বলেন, গত রাত থেকে উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয়দের আশ্রয় দেয়া হচ্ছে।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

যারা একবেলা ভাত খেতে পারতো না, তারা এখন চারবেলা খায়: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্রামের অর্থনীতি পাল্টে...

বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতেই সুরক্ষিত: খাদ্যমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, শেখ হাসিনা...

র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র

ঢাকা অফিস: মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল...

৬ তারিখে বাজেট দেব, বাস্তবায়নও করবো : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ৬ তারিখে...