পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা: যুবদল নেতা মুরাদ গ্রেফতার

বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজকে পিটিয়ে হত্যা মামলার আসামি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)

সোমবার (২৭ নভেম্বর) র‌্যাব-৭-এর একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মুরাদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে।

ওই মামলার ১৬৩ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি তিনি।

মুরাদ চৌধুরী রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পূর্বসরফভাটা গ্রামের বাসিন্দা।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) র‌্যাব-৭-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে মুরাদ চৌধুরী তার অনুসারীদের নিয়ে অবস্থান নেয়। মঞ্চে উপবিষ্ট কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা ছিলো পুলিশের ওপর বর্বরোচিত ও নৃশংস হামলা চালিয়ে তদের মনোবল ভেঙে দেয়া। ওই নির্দেশনা মোতাবেক কাকরাইলে উপস্থিত কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করলে, পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। কাকরাইলের সংঘর্ষের সুযোগ নিয়ে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নির্দেশে নয়াপল্টনে বিএনপি পার্টি অফিস সংলগ্ন ভিক্টরিয়া হোটেলের পাশের গলি দিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরী তার অনুসারীদের নিয়ে পুলিশের ওপরে হামলার জন্য এগোতে থাকেন। এ সময় দলের একটি অংশ বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে বিজয় নগর পানির ট্যাংকির দিকে যায় এবং অন্য অংশটি ছাত্রদল নেতা আমান ও জাকির হোসেন জসিম নেতৃত্বে বক্স কালভার্ট রোডের অন্য প্রান্তে এগোতে থাকে। রোডের পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছানোর পর ছাত্রদল কর্মীরা সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিম প্রান্তে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদেরকে সাহায্য করার জন্য অন্য প্রান্তের পুলিশ সদস্যরা পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়। পশ্চিম দিকে এগোতে থাকা পুলিশ সদস্যদের ওপর ছাত্রদল নেতা আমান, যুবদল নেতা জাকির হোসেন জসিম ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ সদস্যরা টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে হামলা প্রতিহতের চেষ্টা করে। জানমাল এবং সরকারি সম্পত্তি রক্ষা ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য পুলিশ সদস্যরা অস্ত্র ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকে। নাশকাতকারীদের বিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে যায়। এমন সময় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। আঘাতের ফলে কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং রক্তাক্ত অবস্থায় তার নিথর দেহটি রাস্তায় পড়ে থাকে। পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। বিক্ষোভকারীরা মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ সদস্য পারভেজের নিথর দেহের ওপর বর্বরভাবে আঘাত করতে থাকে। আঘাতের একপর্যায়ে কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের মৃত্যু নিশ্চিত করে ছাত্রদল নেতা আমান, যুবদল নেতা জাকির হোসেন জসিম ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরী তাদের অনুসারীদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেফতার লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি ও ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, মনোবল ভেঙে দেয়ার উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক পুলিশের ওপর বর্বরোচিত ও নৃশংস হামলায় অংশগ্রহণ করে।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

৪০ ডিগ্রির নিচে নামলো তাপমাত্রা

ঢাকা অফিস: কয়েক ডিগ্রি কমে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে...

টানা আট দফা কমার পর বাড়লো সোনার দাম

ঢাকা অফিস: দেশের বাজারে টানা আট দফা কমার পর...

উপজেলা নির্বাচন: প্রথম ধাপে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে ইসির নির্দেশনা 

ঢাকা অফিস: আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে...

লেক থেকে দুই স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার

ঢাকা অফিস: রাজধানীর উত্তরায় লেকের পানি থেকে দুই স্কুলছাত্রের...