বাংলাদেশে ১৮ বছরের কম বয়সীরা মেয়েরা বিয়ের পিড়িতে বসছে। মোট বিয়ের ৪৫ শতাংশ বাল্যবিবাহ। বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে আছে ৭০ শতাংশ কিশোরী।
বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে ৭০ শতাংশ কিশোরী ব্র্যাকের সোশ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড লিগ্যাল প্রটেকশন (সেলপ) কর্মসূচির আওতায় ‘বর্ন টু বি আ ব্রাইড’ শিরোনামে করা এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে দেশের ২৭টি জেলার দুই হাজার ৮০টি গ্রামের ৫০ হাজার পরিবারের ওপর জরিপটি পরিচালনা করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। আগামী ১১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসকে কেন্দ্র করে এই আয়োজন করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, ১৬-১৭ বছর বয়সী মেয়েরা বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে বেশি থাকে। স্কুল থেকে ঝরে পড়া মেয়েদের চেয়ে পড়াশোনায় থাকা অবস্থায় বেশি বাল্যবিবাহ হয়েছে, যা মোট বাল্যবিবাহের ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ বাল্যবিবাহ হওয়া মেয়েদের কেউ ছয় মাস, কেউ এক থেকে সাত বছরের বেশি সময় স্কুলে পড়েছে। আবার অনেকে কখনো স্কুলেই যায়নি।
বাল্যবিবাহের পেছনে দারিদ্র্যকে বড় কারণ বলা হলেও জরিপে উঠে এসেছে, ধনী ও মধ্যবিত্ত পরিবারেও বাল্যবিবাহের হার ৫০ শতাংশের ওপরে।
গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, এই জরিপে শুধু মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। মেয়েরা না হয় বাধ্য হয়। ছেলেদের কথা কেনো বলা হচ্ছে না। একটা ছেলে কেনো বাল্যবিবাহ করে? ছেলেদের নিয়ে কেনো স্ট্যাডি হচ্ছে না। ছেলেরা কেনো অল্প বয়সের মেয়ে বিয়ে করতে চায়?
স্ট্যাডিগুলো ভিন্ন ধাঁচে আনার আহবান জানিয়ে মেহের আফরোজ বলেন, যে ছেলেরা অল্প বয়সের মেয়েদের বিয়ে করতে চায়, তাদের লজ্জা দেন। মেয়েদের কেনো খালি জ্ঞান দিচ্ছেন। ছেলেদের কেনো ধরছেন না। শুধু মেয়েদের সচেতন করলে হবে না।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, যে পরিবারে একটিমাত্র মেয়ে, সেখানে বাল্যবিবাহের হার ৮৯ শতাংশ। মুসলিম মেয়েদের তুলনায় হিন্দু মেয়েদের বাল্যবিবাহ বেশি হচ্ছে। বেশি শিক্ষিত অভিভাবকের চেয়ে কম শিক্ষিত অভিভাবকরা বাল্যবিবাহ বেশি দিচ্ছেন।
স্বাআলো/এস