আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর)।
এ দিনটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, শিল্পকলা একাডেমী এবং সুলতান কমপ্লেক্সের আয়োজনে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে শিল্পী সুলতানের রুহের মাগফেরাত কামনা করে কোরাআনখানী, শিল্পীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিল, প্রয়াত শিল্পী এস এম সুলতানকে উদ্দেশ্য করে শিশুস্বর্গের শিশুদের লেখা চিঠি ও কবিতা লেখা, শিল্পী সুলতানের প্রাক্তন ছাত্র ও সুলতান ভক্ত প্রায় ২৫ জন চিত্রশিল্পীর শিল্পকর্মের প্রদর্শনী ও তাদের অংশগ্রহণে আর্ট ক্যাম্প, শিশুদের আনন্দ দিতে পাপেট শো এবং বিকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শিল্পীর জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা ও প্রয়াত শিল্পীর ওপর নির্মিত ‘আদমসুরত’ প্রামাণ্যচিত্র আদম সুরত প্রদর্শনী এবং পালাগানের আসর অনুষ্ঠিত হবে।
শিল্পী সুলতানের মৃত্যুবার্ষিকীকে ঘিরে নড়াইলের সাংস্কৃতিক সংগঠন এস এম সুলতান শিশু চারু ও কারুকলা ফাউন্ডেশন পৃথকভাবে ১১ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। নড়াইল শহরে অবস্থিত সুলতান মঞ্চে চার দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাংলাদেশ ও ভারতের চিত্রশিল্পীদের নিয়ে আর্টক্যাম্প, শিশুদের চিত্রাংকন
প্রতিযোগিতা এবং আলোচনা সভা।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীসহ অনেকে এসময় উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ও শিল্প সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ ও প্রসারের উদ্যেশ্যে প্রতি বছরের মতো এবারো জেলা প্রশাসন ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে নড়াইলের চিত্রা নদীতে শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে নারী ও পুরুষের এস এম সুলতান নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাঅনুষ্ঠিত হবে। নড়াইল শহরের শেখ রাসেল সেতু থেকে মাছিমদিয়া এলাকায় অবস্থিত এস এম সুলতান সেতু পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হবে। বাইচে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। প্রতি বছর আনুমানিক অর্ধলক্ষ মানুষ নড়াইলের ঐতিহ্য এ নৌকা বাইচ উপভোগ করে থাকে। প্রয়াত এই শিল্পীর মৃত্যুবার্ষিকীকে ঘিরে নড়াইলের সুলতান মঞ্চ চত্বরে শতাধিক স্টল বিভিন্ন বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে। এছাড়া শিশুদের বিনোদনের জন্য খেলনা ট্রেন ও নাগোরদোলা বসেছে।
চিত্রশিল্পের খ্যাতি হিসেবে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া ১৯৮২ সালে একুশে পদকসহ ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি এবং ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ
সম্মাননা।
এস এম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল শহরের মাছিমদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার বাসভবন ভেতরে শায়িত করা হয়।
উল্লেখ্য, বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল শহরের মাছিমদিয়া গ্রামে বাবা মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। সুলতান ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। বরেণ্য এই শিল্পীকে নিজ বাড়ির আঙ্গিনা নড়াইলের সুলতান কমপ্লেক্সে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
স্বাআলো/এসএস
