চুয়াডাঙ্গায় বোনকে হত্যা করে নাটক সাজায় আপন ভাই

মামলা দায়েরের ৭ ঘণ্টা পর পুলিশি তদন্তে জানা গেলো চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌর এলাকার মোহাম্মদপুর পাড়ায় বোন মিম আক্তার মঞ্জুরার (২৮) হত্যাকারী তারই আপন ভাই আলমগীর কবীর (৩২)।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪টায় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দীন আল আজাদ পিপিএম-সেবা ঘটনার বিবরণে হত্যাকাণ্ডের বিষটি জানান।

চুয়াডাঙ্গায় ভাইকে আটকে রাখায় প্রতিবাদ, বোনকে তুলে নিয়ে হত্যা

তিনি জানান, সোমবার দর্শনা থানায় নিহত মিম আক্তার মঞ্জুরার স্বামী সুরুজ মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়েরের ৭ ঘণ্টা পর চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নির্দেশে তিনিসহ সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা, ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চে (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ, ডিবির এসআই শহিদুল বাশার, সাজ্জাদ হোসেন, মুহিদ হাসান, এএসআই রজিবুল হকসহ বাদী নিহত মিম আক্তার মঞ্জুরার স্বামী সুরুজ মিয়া ও আশপাশের লোকজনের বক্তব্য পর্যালোচনা এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, গত শনিবার (২১ অক্টোবর) রাতে আলমগীর কবীর তার বোন মিম আক্তার মঞ্জুরাকে হত্যা করে।

পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে, বিয়ের পর থেকেই স্বামীসহ তার বোন মিম এক সঙ্গে তাদের বাড়িতে বসবাস করতো। বোন মিম তার আপন খালাতো বোনের স্বামীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সে তাকে পরকীয়া থেকে ফিরে আসতে বারবার সর্তক করে। কিন্তু তার বোন প্রেমের সম্পর্ক থেকে ফিরে আসতে নারাজ ছিলো এবং প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে কথা বলতে থাকে। সে রাগের বশবর্তী হয়ে বোন মিমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক বোন মিমকে কৌশলে বাড়ির পাশে আমবাগানে ডেকে নিয়ে যায় এবং কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে মিমের ওড়না দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ বেগুনক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে ধারালো দা দিয়ে সে তার বোনকে গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে ঘটনা অন্যদিক প্রবাহিত করার জন্য আলমগীর ওই দা দিয়ে নিজের মাথায় তিনটি পোঁচ দেয় এবং আমগাছে থাকা দড়ি নিয়ে নিজে নিজেই হাত-পা বেঁধে চিৎকার করতে থাকে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করলে উক্ত অপহরণের নাটক সাজিয়ে সে তাদের বিভ্রান্ত করে। ঘটনার বিষয়ে আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের কাছে আলমগীর হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। জবানবন্দী দেয়ার পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা ও রক্তমাখা জামাকাপড় আলামত হিসাবে জব্দ করা হয়েছে।

নিজের বোনকে হত্যা করে নিজেই অপহরণ ও দুর্বৃত্তের নাটক সাজিয়ে রেহাই পেলো না আলমগীর।

স্বাআলো/এসএস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

ফের দাম কমলো এলপি গ্যাসের, আজ থেকেই কার্যকর

ঢাকা অফিস: মে মাসের জন্য তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি)...

শনিবার থেকে খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: শিক্ষা মন্ত্রণালয়

ঢাকা অফিস: যথারীতি শনিবার থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা...

যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা অফিস: থাইল্যান্ড সফরে সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার...

থাইল্যান্ড সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার (২ মে)...