তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন, আকাশ পথে খুললো সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের একাংশের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৭ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা স্মারক দেয়া হয়। এর আগে আজ সকাল ১০টার পর তিনি শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এরিয়ায় এসে পৌঁছান।

এসময় দেশের গানের সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ -এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্সাল এম মফিদুর রহমান।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। মেগাসিটি ঢাকার বুকে যেন এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। এর মধ্য দিয়ে দেশের প্রথম কোনো বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের সেবা মিলবে। দুই লাখ ত্রিশ হাজার বর্গমিটার পরিসরের এ টার্মিনাল অত্যাধুনিক সব ধরনের সেবায় স্বস্তিবোধ করবেন যাত্রীরা। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় থাকছে অটোমেশন ব্যবস্থা।

আধুনিক সরঞ্জাম, স্বয়ংক্রিয় সেবা ও চোখ আটকে থাকা নকশা এরইমধ্যে আকৃষ্ট করেছে বিশ্বের নামিদামি বিভিন্ন এয়ারলাইন্সকে। লক্ষ্য পূরণে বাড়বে যাত্রী সংখ্যাও। উন্নত সেবার বিপরীতে কয়েকগুণ আয় বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে সিভিল এভিয়েশন। নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্য যোগাযোগ ব্যবস্থা আস্থার যোগান দেবে বিদেশিদের। ভারী হবে বিনিয়োগের পাল্লাও- এমনটা মনে করেন অর্থনীতিবিদরাও।

আজ উদ্বোধন হলেও তৃতীয় টার্মিনালে পুরোদমে যাত্রীসেবা মিলবে ২০২৪ সালের শেষ দিকে। এ স্থাপনাকে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে নতুন সংযোজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

শাহজালালের তৃতীয় এই টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। নতুন করে তিন হাজার কোটি টাকা বাড়লে প্রকল্পের ব্যয় হবে ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।

খরচের বেশিরভাগ আসছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে। সংস্থাটি ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

বর্তমানে শাহজালালে যে দুটি টার্মিনাল রয়েছে তা এক লাখ বর্গমিটার জায়গার ওপর। তৃতীয় টার্মিনালটি বর্তমান দুটি টার্মিনালের দ্বিগুণের বেশি। ভবনটির আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। এটির নকশা করেছেন স্থপতি রোহানি বাহারিন, যিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনালের নকশা করে বিশ্বে খ্যাতি কুড়িয়েছেন।

থার্ড টার্মিনালটির ভবন হবে তিনতলা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় এর নির্মাণকাজ। এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে জাপানের মিত্সুবিশি ও ফুজিটা এবং কোরিয়ার স্যামসাং এই তিনটি প্রতিষ্ঠান থার্ড টার্মিনাল ভবন নির্মাণকাজ করছে।

স্বাআলো/এসএস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

টানা ৮ দফায় সোনার দাম কত কমলো

ঢাকা অফিস: দেশের বাজারে টানা আট দফায় সোনার দাম...

বিদ্যুতের দাম বছরে ৪ বার বাড়বে

ঢাকা অফিস: ভর্তুকি কমিয়ে আনতে বছরে চারবার বিদ্যুতের দাম...

মন্ত্রী-এমপিদের হুঁশিয়ারি দিলেন,

ঢাকা অফিস: প্রভাবিত না করে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আসন্ন...

গুচ্ছের বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আজ

ঢাকা অফিস: গুচ্ছভুক্ত ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের মানবিক অনুষদভুক্ত...