সম্পাদকীয়: খুলনার ডুমুরিয়ার গোলাবদোহা গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের পাশের ১০০ বিঘা জমি ২১ বছর ধরে দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীরা। একাই দখল করেছেন ৪৫ বিঘা জমি। দখল করা ওই জমিতে চিংড়ি চাষ করা হয়।
দখলের কারণে পানির তোড়ে বেড়িবাঁধের প্রায় ৭৫ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। বেড়িবাঁধের দুপাশের পাঁচ কিলোমিটার বনের গাছ উজাড় হয়ে গেছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। কোনো কারণে বেড়িবাঁধ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে এখানকার ১৩টি গ্রামের মানুষের জীবনে নেমে আসবে মহাদুর্ভোগ।
কৃষকরা মাঠের উৎপাদিত ফসল আর ঘরে আনতে পারবে না। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন বেড়িবাঁধের অবৈধ জমি উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়, এটা দাবি করেছে এলাকার মানুষ।
সরকারি ১০০ বিঘা জমি ২১ বছর ধরে দখল করে মাছ চাষ করা, কিন্তু এ খবর নাকি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানে না। এত বছরেও বিষয়টি কেন তাদের নজরে এলো না, সেটা একটা প্রশ্ন। কর্তৃপক্ষ এতদিন পর বলছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে অবৈধ দখলে থাকা জমি উদ্ধার করে দেবে। পাশাপাশি যারা এসব জমি দখল করে বাঁধ ও বনজ সম্পদের ক্ষতি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেবে।
২১ বছর ধরে কীভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডেরএত জমি অবৈধভাবে দখল করে রাখলো, সে প্রশ্ন এসে যায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু ডুমুরিয়ায় সরকারি বেড়িবাঁধের জমি দখল করে মাছ চাষ করা হচ্ছে তা না। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। খাল-বিল, নদ- নদী, বনভূমি, বেড়িবাঁধের জমি দখল করে নেয়। আর এসব অন্যায় কর্মকান্ডে ইন্ধন জোগায় প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা।
ডুমুরিয়ার বেড়িবাঁধের জমি দখলের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবে, এটা আমরা আশা করবো। দখলদাররা যত বড় ক্ষমতাশালীই হোক না কেন, তাদের খুঁজে বের করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে কিছুদিনের মধ্যেই বেড়িবাঁধের জমি উদ্ধারের জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেবে। আমরা বলতে চাই, শুধু জমি উদ্ধার করলেই হবে না। উদ্ধার করা জমি আবার যেন দখল করে নিতে না পারে, সেজন্য টেকসই ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্বাআলো/এস