spot_img

যবিপ্রবিতে স্নাতক ডিগ্রি পেতে বৃক্ষরোপণ বাধ্যতামূলক

স্নাতক ডিগ্রি পেতে বাধ্যতামূলক ন্যুনতম পাঁচটি বৃক্ষরোপণের নিয়ম করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ। এ অনুষদের অধীনে একমাত্র ইংরেজি বিভাগের আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জনের জন্য বাধ্যতামূলক গাছ লাগাতে হবে।

গত ৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের ৫৩তম সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

এর জন্য কোনো ক্রেডিট বা নম্বর বরাদ্দ না থাকলেও, বিভাগ থেকে এ বিষয়ে ছাড়পত্র প্রেরণ না করলে কোনো শিক্ষার্থী তার সনদ উত্তোলন করতে পারবে না। ফলে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সের অধীনে বাধ্যতামূলকভাবে পাঁচটি গাছ লাগাতে হবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে, রাস্তার ধারে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বা যেকোনো উপযুক্ত জায়গায় প্রতি বছর কমপক্ষে ২০০ বৃক্ষরোপণ করবে।

ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, কয়েক বছর ধরে বিরূপ আবহওয়ার প্রাদুর্ভাব, তীব্র দাবদাহ, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা, পরিবেশগত দূষণ এবং বিপর্যয় প্রশমনের অংশ হিসেবে যবিপ্রবির ইংরেজি বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটি অনুষদীয় সভার মাধ্যমে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে প্রেরণ যা পরবর্তীতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণ ফোরাম, রিজেন্ট বোর্ডের ৯৪তম সভায় ও অনুমোদিত হয়।

এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মুনিবুর রহমান বলেন, আমরা সবাই ধরিত্রী মাতার সন্তান। অথচ এ সর্বংসহা ধরিত্রীকে আমরা নানাভাবে লুণ্ঠন করেছি, বাস্তুতন্ত্র বিপর্যস্ত করেছি এবং পৃথিবীকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছি। ভবিষ্যতে মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই পৃথিবীকে সারিয়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে। যদি পৃথিবী বাসযোগ্যই না থাকে, তাহলে আমাদের সব জ্ঞান ও অর্জন কোন কাজেই আসবে না। কিন্তু, শুধু ইংরেজি বিভাগের এ উদ্যোগ গোটা দেশের জন্য উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন আনবে না। তবে, আমরা বিশ্বাস করি, ধরিত্রী মাতাকে সারিয়ে তোলার তাগিদে যবিপ্রবির অন্যান্য বিভাগসহ বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একদিন এগিয়ে আসবে, ধরিত্রী মাতা আবার সবুজ-শ্যামলিমায় সুন্দরী ও বাসযোগ্য হয়ে উঠবে।

তিনি আরো বলেন, যদি কোন শিক্ষার্থী অর্থাভাবে পাঁচটি বৃক্ষের চারা ক্রয় করতে না পারে, তাহলে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুদানে পরিচালিত কল্যাণ তহবিল থেকে সাহায্য করা হবে।

এ প্রসঙ্গে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু জ্ঞান-বিজ্ঞানের দ্বারই উন্মোচন করে না, তাদেরকে সমাজ ও দেশের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে। ইংরেজি বিভাগের এ সিদ্ধান্তটি সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রতিপালন এবং পরিবেশ রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। শুধু বৃক্ষরোপণ নয়, আরো সমাজসেবামূলক কাজে তরুণদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। আমার অনুরোধ থাকবে, আগামীতে বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি সাক্ষরতা অভিযান, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখাসহ সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি ও সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ যেন সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আমার বিশ্বাস, আগামীতে যবিপ্রবির এ দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের সব প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসবে। একটি নিরাপদ, বাসযোগ্য, সুস্থ ও সুন্দর পৃথিবী গড়তে বৃক্ষ রোপণের কোন বিকল্প নেই।

স্বাআলো/এসএস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য
Related

যশোরে তালাকপ্রাপ্ত স্বামী-স্ত্রীর পাল্টাপাল্টি মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে বাড়ি দখল, মারামারি, টাকা ও স্বর্ণালংকার...

যশোরে বাঁধ ভেঙে তিন গ্রাম প্লাবিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের অভয়নগর উপজেলার আতাই নদের বাঁধ ভেঙে...

বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: একদিন বন্ধ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার (১৮...

যশোরের সাথে ঢাকা, খুলনা, ঝিনাইদহ ও বেনাপোলের যান চলাচল বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’...