সম্পাদকীয়: যশোরের আরবপুর হাউসপাড়া মহিলা মাদরাসার এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে কোতোয়ালী থানায় প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ১১ মার্চ প্রধান শিক্ষককে আসামি করে ধর্ষণের মামলা করা হয়।
এদিকে, ঘটনার পরপরই ওই প্রধান শিক্ষক পরিবার নিয়ে পালিয়ে গেছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ওই শিক্ষার্থীকে গত ৮ মার্চ প্রধান শিক্ষক তার রুমে ডাক দেয়। পরে তাকে ধর্ষণ করে। এসময় প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষর্থীকে এ বিষয়ে কাউকে জানালে হত্যা করা হবে বলে ভয় দেখায়। ছাত্রীকে শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রায় শোনা যায়। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলো এ পর্যন্ত কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা যায়নি। এতে অপরাধীরা ঘৃণিত অপরাধটি করতে উৎসাহিত হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধা কোথায় তা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষই বলতে পারবে।
অভিভাবকরা নিজের আদরের সন্তানটিকে শিক্ষকদের হাতে তুলে দেন শিক্ষা-দিক্ষায় মানুষ করার জন্য। দিনের বেশি ভাগ সময় ওই শিক্ষার্থী তার শিক্ষাগুরুর কাছেই থাকে। আর অভিভাবকরা নিশ্চিন্তে থাকেন বাড়িতে বা কর্মে। একজন আদর্শ শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা আদর্শ মানুষ হবার শিক্ষা পেয়ে দেশ ও জাতি গড়ার কাজে যুক্ত হয়। অতীতে অন্তত তাই দেখা গেছে। কিন্তু সেই শিক্ষকরা যদি অমানুষের মতো কাজ করেন তাহলে তাদের কাছে শিক্ষার্থীদের পাঠিয়ে মানুষ গড়ার স্বপ্ন দেখা যায় না।
শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। কিন্তু এই সুনাম মনে হয় বেশি দিন থাকবে না। কারণ এক শ্রেণির শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন ধরনের অভিযোগ প্রায় শোনা যাচ্ছে। তারা ন্যায় নীতি পদদলিত করে চলেছেন। যারা শিক্ষকতার পেশায় এসে এ পেশাটাকে অপবিত্র করে তুলেছেন তাদেরকে এ অঙ্গন থেকে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বিদায় করে দেয়া ভালো। কারণ তারা যদি আকণ্ঠ অপরাধে নিমজ্জিত থাকেন তাহলে তাদের হাত দিয়ে সুনাগরিক গড়া একেবারে অসম্ভব। আর লেখাপড়া শিখে যদি সুনাগরিক গড়ে না ওঠে তাহলে দেশ পরিচালনার জন্য সৎ নেতৃত্বের মানুষ পাওয়া যাবে না। জাতির জন্য এটা সন্দেহাতীতভাবে অশনিসংকেত।
স্বাআলো/এসআর