নির্দেশনা উপক্ষো করে যশোরে তীব্র তাপদাহে চলছে কোচিং বাণিজ্য

রুহুল আমিন, যশোর: যশোরে তীব্র তাপদাহে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা বন্ধ থাকলেও পুরোদমে চলছে কোচিং বাণিজ্য। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন শিফটে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কোচিং করানো হচ্ছে।

শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শহরে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দেদারছে কোচিং চালাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন সাধারণ অভিভাবকবৃন্দ।

জানা গেছে, দেশব্যাপী তীব্র তাপদাহে যশোরের অবস্থান ভয়াবহ। যশোরের তাপমাত্রা কখনো দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ হচ্ছে, কখনো দ্বিতীয় হচ্ছে। বেশ কয়েকদিন ধরে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়ামের নিচে তাপমাত্রা নামছে না। কখনো ৪১, কখনো ৪২, কখনো ৪৩ ডিগ্রির কাছাকাছি তাপমাত্রা দাঁড়াচ্ছে। সাধারণ মানুষকে কাজ-কর্ম করতে বেশ অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। তাপ উপেক্ষা করে বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চিন্তা-ভাবনা করে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। তাপমাত্রা স্বাভাবিক হলে যথা নিয়মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলবে। শিক্ষা অধিদফতর থেকে পরিপত্র জারি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হচ্ছে। পরিপত্রে বলা হয়েছে যেসব জেলায় মাত্রা অতিরিক্ত তাপমাত্রা পড়ছে সেসব অঞ্চলে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা বন্ধ থাকবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যশোর শহরের কোচিং সেন্টারগুলো ফয়দা লুটছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোচিং চালাচ্ছে।

আপিল করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত থাকছে ছুটি

শহরে রমরমা কোচিং সেন্টার চালাচ্ছে জিরো পয়েন্ট মোড়ে ম্যাকস কোচিং, অ্যাপার্ট কোচিং, অ্যাডুকেয়ার কোচিং, আলমাস কোচিং, হাসান স্যারের কোচিং, উদ্ভাস কোচিং, মণিহার অঞ্চলে সৃজনশীল কোচিং সেন্টার। এছাড়াও এমএসটিপি স্কুলে শিক্ষকরা ব্যাচ ভিত্তিক কোচিং করাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন অভিভাবক জানান, তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও নিয়মিত কোচিং সেন্টার চলছে। শিক্ষকদের ছুটির মধ্যে বাড়তি আয়ের ভালো সুযোগ হয়েছে। সকাল-সন্ধ্যা কোচিং চালানো যাচ্ছে। গরমে কোমলমতি শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা করে দ্রুত কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা প্রয়োজন। শিক্ষা প্রশাসনকে কড়াকড়ি হতে হবে। শিক্ষা আইন বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। অভিভাবকদের শিক্ষকরা চাপ দিচ্ছে কোচিংয়ে ক্লাস না করালে চরম ক্ষতি হয়ে যাবে। স্কুলে সব পোষানো সম্ভব হবে না। অনেকে বাধ্য হয়ে তাদের সন্তানকে কোচিংয়ে দিচ্ছেন। শিক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটু ব্যবস্থা নিলে কোচিং সেন্টারগুলো চিরতরে বন্ধ করা সম্ভব।

কাল যশোরসহ ২৭ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এম রবিউল ইসলাম বলেন, কোচিং সেন্টারের কোনো অনুমোদন নেই। নিষিদ্ধ প্রতিষ্ঠান। সরকারের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে অপরাধ করছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঊধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

জেলা শিক্ষা অফিসার মাহাফুজুল হোসেন বলেন, যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ সেখানে কোনোভাবেই কোচিং সেন্টার খোলা রাখার সুযোগ নেই। যেসব প্রতিষ্ঠান কোচিং চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) খালেদা খাতুন রেখা বলেন, যেসব কোচিং সেন্টার খোলা থাকবে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কোচিং সেন্টারে না যাওয়ার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

স্মার্ট উপজেলা হবে সদর: বিপুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর সদর উপজেলাবাসীর সেবক হওয়ার জন্য দোয়াত...

শার্শা উপজেলায় চেয়ারম্যান হলেন সোহরাব

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের শার্শা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে...

ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন মনিরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে...

শার্শায় ফুটবল খেলতে গিয়ে স্কুলছাত্র নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের শার্শায় ফুটবল খেলতে গিয়ে রাফসান (১১)...