যশোরে স্বামীর সাথে কলহের জেরে নবজাতক জমজ দুই সন্তানকে ডোবায় ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) কেশবপুর পৌর সদরের সাহাপাড়া নতুন মসজিদের পাশের ডোবা থেকে শিশু দুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মা সুলতানা ইয়াসমিনকে (২৭) আটক করেছে পুলিশ।
আটক সুলতানা ইয়াসমিন সাহাপাড়া এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহিরুল ইসলাম।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বছর দুই আগে সুলতানা ইয়াসমিনের সাথে আবু বক্কর সিদ্দিকের বিয়ে হয়। তাদের উভয়েরই আগে বিয়ে হয়েছিলো। বিয়ে হবার পর সুলতানা ইয়াসমিন বুঝতে পারেন তার স্বামী অন্য নারীতে আসক্ত। তাকে সেখান থেকে ফেরাতে বাচ্চা নেয়ার চিন্তা করেন এবং তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। ১০ নভেম্বর কেশবপুর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে সুলতানা ইয়াসমিনের জমজ সন্তানের জন্ম হয়। যার মধ্যে একটি পুত্র সন্তান এবং অপরটি কন্যা সন্তান। জন্মের পর শিশু দুটির বিভিন্ন শারীরিক জটিলত দেখা দিলে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। পরে তাকে কেশবপুরে এনে চিকিৎসা করানো হয়। ২১ নভেম্বর তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরদিন পুণরায় খুলনায় নিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু রাত দেড়টার দিকে পুত্র সন্তানটি নিস্তেজ হয়ে এলে মা সুলতানা তাকে বাড়ির পাশের ডোবায় নিক্ষেপ করেন। পরে কন্যা সন্তানটিকেও সকলের অগোচরে একই ডোবায় ফেলে দেন। এরপর ঘরে ফিরে বাচ্চাদের পাওয়া যাচ্ছে না- বলে চিৎকার করতে থাকেন। পরিবারের লোকজন বাচ্চা দুটিকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। নবজাতকদের নানা আব্দুল লতিফ থানায় ফোন করে বাচ্চা পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশে জানায়। থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাড়ির দক্ষিণ পাশের ডোবা থেকে প্রথমে পুত্র সন্তানটির মরদেহ এবং পরে কন্যা সন্তানটিকেও মৃত অবস্থায় একই ডোবা থেকে উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে সুলতানা ইয়াসমিন সবার অগোচরে শিশু দুটিকে ডোবায় নিক্ষেপের কথা স্বীকার করেছেন।
কেশবপুর থানার ওসি জহিরুল ইসলাম বলেন, স্বামীর পরকীয়ার সম্পর্কের কারণে কলহের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। জমজ শিশুর মা তার সন্তানদের ডোবায় নিক্ষেপের কথা স্বীকার করেছেন। আরো জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। এ বিষয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
স্বাআলো/এস