ঢাকা অফিস: পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে বসুন্ধরা গ্রুপ তেল, ময়দা, সেমাই, হলুদ, মরিচসহ মোট ২১টি ভোগ্য পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি শুরু করেছে।
রাজধানীতে ছয়টিসহ দেশের ২০টি স্থানে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। রমজান মাসজুড়ে সকাল ১০টা থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত বিক্রি চলবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের (বিজি) ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান।
বসুন্ধরার পণ্য, ভোক্তার জন্য স্লোগান সামনে রেখে নিত্যপণ্যগুলো বিক্রি করছে গ্রুপটির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। অনুষ্ঠানে সাফিয়াত সোবহান বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময় দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় গেলো বছর থেকে শুরু করা এই কার্যক্রম আরো ব্যাপকতার সঙ্গে এই পবিত্র রমজান মাসেও আমরা পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সামনের বছর আমরা দেশজুড়ে ৬৪টি জেলায় সাশ্রয়ী মূল্যে ট্রাক সেল কার্যক্রম চালু করতে পারব বলে আশা রাখি।
উদ্বোধন শেষে সাফিয়াত সোবহান কিছু পণ্য ক্রয় করেন এবং উপস্থিত ক্রেতাদের মাঝে বিতরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের (সেক্টর এ) চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার ক্যাপ্টেন শেখ এহসান রেজা, ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং সিও এম এম জসীম উদ্দিন, সাপ্লাই চেইন ডিভিশনসের সিও আব্দুস শুক্কুর, বসুন্ধরা ফুড ডিভিশনসের চিফ ফিন্যানশিয়াল অফিসার বেলাল হোসেন, প্ল্যানিং ও পাবলিক রিলেশনসের হেড অব স্ট্র্যাটেজি জাকারিয়া জালাল প্রমুখ।
এ সময় বসুন্ধরা ফুড ডিভিশনস এবং বসুন্ধরা এলপিজির হেড অব সেলস রেদোয়ানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ভাইস চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশক্রমে সামনের বছর আমরা সারা দেশেই এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখবো। এই বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিদফতর বসুন্ধরা গ্রুপকে অনেক উৎসাহ দিয়েছে, সহযোগিতা করেছে।
এদিন রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট এলাকার সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে বসুন্ধরা গ্রুপের একই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সব কোম্পানি যেনো বসুন্ধরা গ্রুপের মতো উদ্যোগ নেয়, সাশ্রয়ী মূল্যে ভোক্তাদের সেবার কাজ সম্প্রসারণ করে।
বসুন্ধরা গ্রুপের মোহাম্মদপুর ডিভিশনের বিপণন বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে। কম আয়ের খেটে মানুষ যেনো সাশ্রয়ে পণ্য পায় সে জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মিল গেটের দামে ভোক্তারা পণ্য ক্রয় করতে পারবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ডিএসএম পিযুস সাহা, ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ মাহমুদুল হাসান নাদিম, স্পেশাল সেলস মনিটরিং ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।
দুপুর ১২টায় সচিবালয়ের পাশে খাদ্য অধিদফতরের সামনে সাশ্রয়ী মূল্যের পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দাউদুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের এজিএম কাজী মনিরুজ্জামান মনি, ডিএসএম (সেলস) আল আমিন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (স্পেশাল সেলস মনিটরিং) রবিউল হক ভূঁইয়া, স্পেশাল সেলস মনিটরিং জুয়েল আহমেদ, এ এস এম রোকনুজামান ও এ এস এম নাজমুল করিম প্রমুখ।
কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনের সামনে দুপুরে একই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। এ সময় তিনি বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বসুন্ধরার এই উদ্যোগের ফলে আশা করছি, আমাদের পণ্য সরবরাহব্যবস্থায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বসুন্ধরার এই কার্যক্রমের ফলে বাজার স্থিতিশীল থাকবে।’
কোথায় কোথায় বিক্রি: বসুন্ধরা গ্রুপ জানিয়েছে, রাজধানীতে সচিবালয়ের সামনে, কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের সামনে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ও উত্তরায় ট্রাকে বিক্রি করা হবে। রাজধানীর বাইরে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বগুড়া, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, ফরিদপুর ও বরিশালে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
কোন পণ্যের কত দাম: ট্রাক সেলের মাধ্যমে এক লিটার সয়াবিন তেল ১৫৫ টাকা, এক লিটার সরিষার তেল ২৬৫ টাকা, এক কেজি আটা ৪৮ টাকা, এক কেজি ময়দা ৬০ টাকা, এক কেজি মসুর ডাল ১৪০ টাকা, এক কেজি চিনিগুঁড়া চাল ১৪১ টাকা, ২০০ গ্রাম সেমাই ২৫ টাকা, ২০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাই ৩৫ টাকা, ইনস্ট্যান্ট মাসালা নুডলস (আট প্যাক) ১১০ টাকাসহ আরো কয়েকটি পণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হবে।
স্বাআলো/এসআর