প্রচার মাইকের নিত্যদিনের উচ্চ শব্দের প্রচারে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জবাসীর কাছে অসহনীয় হয়ে উঠেছে। গরুর গোসতের দাম কমেছে, ইলিশের মূল্য ছাড় এসব কথা হররোজ মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। প্রচারকারীরা এত বেপরোয়া যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছেও তারা উচ্চ শব্দে প্রচার করতে দ্বিধা করছে না। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ কথা তুলে ধরা হয়েছে। শুধু রাজগঞ্জ নয়, জেলার সর্বত্র এ অবস্থা চলছে। বছর খানেক যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় সচেতনামূলক মতবিনিময় সভায় শব্দ নিয়ন্ত্রণের আহবান জানানো হয়। পরিবেশ অধিদফতরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্ব প্রকল্পের আওতায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শব্দদূষণ বন্ধ করতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে নিজের অবস্থানে থেকে এটা বন্ধ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা। শব্দদূষণের ভয়াবহতা যে কত বড় মারাত্মক তা সরকার, পরিবেশ অধিদফতর, প্রশাসন এবং পরিবেশবিদরা ভালোভাবেই জানেন। কিন্তু তা প্রতিরোধে কোনোই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, শব্দদূষণের ফলে শিশুদের মধ্যে বর্বরতার হার বাড়তে থাকবে। তারা লেখাপড়ায় অমনোযোগী ও বিকার মানসিকতা সম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠবে। এর ফলে আগামী প্রজন্ম মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়া, বধিরতা, হৃদরোগ, মেজাজ খিটখিটে হওয়া ও ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টিসহ নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
যানবাহনের হাইড্রোলিক হর্ন, শহরে ইঞ্জিনের শব্দ, ফিটনেসহীন যানবাহনের বিকট আওয়াজ প্রভৃতি চলছে নিয়ন্ত্রহীনভাবে। মানুষের শব্দের সাধারণ ধারণ ক্ষমতা ৩০ ডেসিবল। কিন্তু এর মাত্রাস্থান ভেদে ৭৮ থেকে ১০৬ ডেসিবল। শব্দদূষণের বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে উপরোক্ত সমস্যায় ভারাক্রান্ত হবে দেশ।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের আওতায় শব্দদূষণ বিধিমালা কার্যকর করতে হবে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি, পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সর্বোপরি এ পরিস্থিতি থেকে জনগণকে মুক্ত করতে প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং জনসচেতনতা।