সড়কের পাশে অস্বাস্থ্যকর খাবারের দোকান, ঝুঁকির আশঙ্কায় মানুষ

রংপুর মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক সংলগ্ন এলাকায় খাবারের দোকানগুলোতে প্রতিদিনই ভিড় বেড়েই চলছে। ভোজনবিলাসীরা এসব খাবারের দোকান কিংবা হোটেলগুলোতে নিয়মিত ক্রেতা হচ্ছেন। এতে অনেকেই নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব খাবারে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।

তারা বলছেন, রংপুর মহানগরীসহ জেলার আট উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে খাবার হোটেল, রেস্তোরা, ফুচকা, চটপটি, পুরিসহ নানা ধরনের খাবার দোকান গড়ে উঠেছে। অনেক স্থানে ভ্র্যাম্যমাণ দোকানও গড়ে উঠেছে। এসব খাবারগুলো অনেক সময় ঢাকা থাকে না। খোলা পরিবেশে থাকে। এতে ধুলাবালি ও ময়লা উঠে পড়ে। সাথে মশার উৎপাত দেখা দেয়। অনেকেই সচেতনতার অভাবে সড়কের ধারের দোকানের খাবার খাচ্ছেন। এতে তারা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকের চিকিৎসা খরচও বাড়ছে। তাই তারা এসব খাবারে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা করছেন। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে সরকারের ভোক্তা অধিদফতরসহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অভিযান দাবি করেন।

রংপুর নগরীর কাচারি বাজার, সিটি বাজার, ধাপ মেডিকেল মোড়, রংপুর কলেজ রোড, জাহাজ কোম্পানি মোড়, প্রেসক্লাব এরিয়া, শাপলা চত্বর, খামার মোড়, স্টেশন এলাকা, লালবাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, পার্ক মোড়, চকবাজার, দর্শনা, দমদমা, টার্মিনাল, সাতমাথা, তিনমাথা, জিলা স্কুল মোড়, দমাদমা, বৈরাগীগঞ্জ, নব্দীগঞ্জ, মহিপুর, হাজিরহাটসহ রংপুর নগরী ও জেলার প্রায় দুই শতাশিক মোড়, বাজার, সড়কের পাশে এসব খাবারের দোকান ও হোটেল গড়ে উঠেছে।

এসব দোকানে বিক্রেতারা ফুচকা, ডিম, ভই রুটি, ঝালমুড়ি, পিঠা, চটপটি, পরোটা, পুরি, শিঙ্গাড়া, সমুচা, পেঁয়াজু, আইসক্রিম, নুডলস, চপ, ফলের রস, হালিম, খিচুড়ি, ভাতসহ নানা ধরনের খাবার বিক্রি করেন। ভাতের সাথে বিক্রি হয় নানা পদের ভর্তা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও স্বল্প আয়ের অনেক মানুষজন এসব খাবার খেয়ে থাকেন।

অনেকেই জানিয়েছেন, অনেক দোকানের খাবারে ধুলাবালি সহজেই সহজে মিশে যাচ্ছে। অনেক সময় খাবারে বসে যাচ্ছি। টাকাতেও জীবাণু অনেক বিক্রেতার হাত, গামছা, নোংরা থাকে। অনেক সময় পানিতে বার বার প্লেট ও গ্লাস পরিস্কার করা হয়। অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও অনেকটা হুমড়ি খেয়ে পড়ে এসব দোকানের খাবারের জন্য। বিশেষ করে টিফিনের সময় ভিড় বেড়ে যায়। অনেক অভিভাবকরাও এসব দোকানে খেয়ে থাকেন।

নগরীর চকবাজার এলাকার শিক্ষার্থী নুর হোসেন ও আমিনুল ইসলাম জানান, তারা মেসে থাকেন। কমদামে পাওয়া যায় বলেই সড়কের ধারে দোকানের খাবার খান। কারণ মেসে অনেক সময় ঠিকমত রান্নাও হয় না।

নগরীর রাধাবল্লভ এলাকার বড়বিল হাউজের আশরাফুল আলম নেতা জানিয়েছেন, কর্মের খাতিরে নগরীতে বসবাস করেন। প্রায় সময় এসব দোকানে খাবার খেয়ে থাকেন। দাম কম তাই তার মতো অনেকেই এসব দোকানের কাস্টার বলে তিনি জানান।

তবে তিনি জানান, এসব দোকানে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বালাই নেই। খাবারগুলো খোলা পরিবেশে থাকে। কিন্তু কিছুই করার নেই তাই খান।

ধাপ এলাকার শহিদুল ইসলাম শহীদ ও নুর বলেন, সড়কের পাশের খাবারে রং মেশানো থাকে। অনেক সময় বার বার গরম করে পঁচা বাঁসি খাবারো তারা বিক্রি করেন। এতে শিক্ষার্থীসহ অনেকেই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।

রংপুর মহানগর মানবাধিকার সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ নেওয়াজ লাবু জানিয়েছেন, রংপুর একটি প্রাচীনতম শহর। এই শহরের বিভিন্ন মার্কেটের পাশে, বিভিন্ন ব্যস্ততম এলাকা এবং অলিগলির মোড়গুলোতে অসংখ্য খাবারের দোকান ঘরে গড়ে ওঠেছে। ক্রেতাও কম নয়।

তিনি বলেন, এসব দোকানির তালিকা করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে তাদের আয়ের একটা অংশ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

প্রবাসী স্বামীর দুই কোটি টাকা আত্নসাৎ, পরকীয়া প্রেমিক কারাগারে

রংপুর ব্যুরো: রংপুরে বিয়ের নামে প্রতারণা করে প্রবাসী স্বামীর...

শাশুড়ির সোনার গহনা ও নগদ অর্থ চুরি, জামিনে বেরিয়ে প্রাণনাশের হুমকি

রংপুর ব্যুরো: রংপুরের মাহিগঞ্জ ডিমলা কানুনগোটলা এলাকায় শাশুড়ির বাসা...

যশোরের তিন উপজেলায় ৩১ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে তিনটি...

রংপুরে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায়

রংপুর ব্যুরো: সারাদেশের মতো রংপুর নগরীসহ জেলার কাউনিয়া ও...