যশোর শিক্ষাবোর্ডের এসএসসির সনদপত্র থেকে লেখা উঠে যাচ্ছে

রুহুল আমিন, যশোর: যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে ২০২৩ সালের এসএসসি সনদপত্রে অত্যান্ত নিম্নমানের কাগজ ও কালি ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। সনদপত্র প্রিন্ট দেয়ার পর লেখা উঠে যাচ্ছে। যার ফলে শিক্ষাবোর্ডের বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। একই সনদপত্র দুইবার প্রিন্ট দেয়ার বিকল্প নেই।

সেই ক্ষেত্রে কাগজ ও কালি বাবদ ডাবল খরচ করতে হবে শিক্ষাবোর্ড। ২০২২ সালেও এইচএসসি পরীক্ষার সনদপত্রে বানান ভুল থাকায় সনদপত্রগুেেলা বাতিল করে সেই সময়ে নতুন করে প্রিন্ট দিয়ে হয়েছিলো। যার ফলে, শিক্ষাবোর্ডের সেবার মান নিয়ে নানামুখী প্রশ্ন উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর শিক্ষাবোর্ডে ২০২৩ সালে এক লাখ ৩৪ হাজার ২১৩ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়। শিক্ষাবোর্ডে পরীক্ষা বিভাগ থেকে এক লাখ ৩৪ হাজার ২১৩টি সনদপত্র প্রিন্ট দেয়া হয়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. শাহীন আহম্মেদের নেতৃত্বে সনদপত্র প্রণয়ন ও প্রিন্টের সাথে জড়িত ছিলেন সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট জাহাঙ্গীর কবির, সহকারি প্রোগ্রামার মুরাদ হোসেন ও কম্পিউটার অপারেটর আব্দুর রাজ্জাক।

আমেরিকায় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যশোরের তাসকিন তানিকা

সদনপত্র প্রিন্ট দেয়ার পর শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাক্ষর করার জন্য গ্রুপ করে দেয়া হয়। গ্রুপ ভিত্তিক বণ্ঠন করা হয়। সনদপত্রে স্বাক্ষর করার সময় এই ত্রুটিটি ধরা পড়ে। সনদপত্রে ঘষা লাগলেই লেখা উঠে যাচ্ছে। যেটা কোনোভাবেই ব্যবহার উপযুক্ত নয়। তারপরও সব সনদপত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাক্ষর করেছেন। এক লাখ ৩৪ হাজার ২১৩ জন শিক্ষার্থীর সনদপত্র দিতে হলে নতুন করে আবার প্রিন্ট দিতে হবে। সেই ক্ষেত্রে কাগজ ও কালি আবারো নতুন করে ক্রয় করতে হবে। এতে একদিকে বড় অয্কের টাকা অপচয় হবে অন্যদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একই কাজ দুইবার করতে হবে। এ জন্য শিক্ষাবোর্ডের সাধারণ কর্মচারী, শিক্ষক, অভিভাবকরা ব্যাপকভাবে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

আব্দুর রহিম নামে এক অভিভাবক জানান, তার বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুরে। তার ছেলে ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা পাস করেছে। বিশেষ কাজে তার সনদপত্র প্রয়োজন। কিন্তু শিক্ষাবোর্ডের ভুলের কারণে তিনি পাচ্ছেন না। সনদপত্র আবার নতুন করে প্রিন্ট হবে তারপর প্রক্রিয়া মেনে সনদপত্র নিতে হবে।

শাহিদা খাতুন নামে এক অভিভাবক জানান, তার বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জে। তার মেয়ে ২০২৩ সালে এসএসসি পাশ করেছে। মেয়ের জন্মনিবন্ধন কার্ড সংশোধন করার জন্য এসএসসি পরীক্ষার সনদপত্র প্রয়োজন। শিক্ষাবোর্ডের ভুলের কারণে তিনি সনদপত্র পাচ্ছেন না। কবে পাবেন তারও নিশ্চয়তা নেই। কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে জানান নিভূল সনদপত্র পাবেন। কিন্তু একটু সময় লাগবে।

ভাঙ্গা থেকে যশোর পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু

এ বিষয়ে শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. শাহীন আহম্মেদ জানান, সনদপত্রে লেখা উঠে যাচ্ছে ঘটনাটি সঠিক। কেনো এমন হচ্ছে তার কারণ এখনো জানা যায়নি। ঢাকা থেকে শিক্ষাবোর্ডের সনদপত্র প্রিন্ট দেয়ার জন্য কাগজ ক্রয় করা হয়। কাগজে না কালিতে সমস্যা এটা যাচাই করার জন্য বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে হবে। ত্রুটি ধরার জন্য তাকে (পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক) আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ওই কমিটিতে কলেজ পরিদর্শক সমীর কুমার কুন্ডু ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ডকুমেন্ট) রেজাউল ইসলামকে সদস্য করা হয়েছে। আশা করা যায় দ্রæতই ওই কমিটির রিপোর্টের মাধ্যমে প্রকৃত বিষয়টি জানা যাবে।

শিক্ষাবোর্ডের সচিব প্রফেসর এম. আব্দুর রহিম জানান, যতোদূর জানি মেশিনের পদ্ধতিগত ভুলে সনদপত্র থেকে লেখা উঠে যাচ্ছে। ডাবল হিট দিলে ঠিক হয়ে যাচ্ছে। বেশি সমস্য থাকলে বাতিল করা ছাড়া উপায় নেই। প্রকৃত কারণ উদঘটন করার পরে সিদ্ধান্তে আসা যাবে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয় এ ধরণের সিদ্ধান্ত শিক্ষাবোর্ড গ্রহণ করবে না।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতেই সুরক্ষিত: খাদ্যমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, শেখ হাসিনা...

যে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব জব্দই থাকছে

ঢাকা অফিস: গত ৪ মার্চ আয়কর আইনের বিধান অনুসারে...

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

ঢাকা অফিস: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার...

৫৩৮ হজযাত্রীর টাকা নিয়ে এজেন্সি মালিক উধাও

ঢাকা অফিস: রিসান ট্রাভেলস ও দিয়া ইন্টারন্যাশনাল নামের দুই...