বাগেরহাটে পরকীয়ার জেরে স্ত্রী ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

আজাদুল হক, বাগেরহাট: জেলার শরণখোলা উপজেলায় মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার রহস্য অবশেষে উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ।

পরকীয়া সন্দেহে স্বামী নিজেই অর্থের বিনিময়ে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যা করে। পিবিআইর জিজ্ঞাসবাদে এমন তথ্য দিয়েছে নিহতের স্বামী আবু জাফর হাওলাদার।

হত্যার দায় স্বীকার করে রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাগেরহাট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আছাদুল ইসলামের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ঘাতক আবু জাফর।

বাগেরহাটে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ: নিহত ১, পুলিশ সদস্যসহ আহত ২৮

বাগেরহাটের পিবিআই পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান।

জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী পাপিয়া ও শিশু মেয়েকে হত্যার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন স্বামী আবু জাফর হাওলাদার।

সে স্বীকারোক্তিতে বলেছে অর্থের বিনিময়ে লোক দিয়ে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। তবে তার মেয়েকে মারার কথা ছিলো না। স্ত্রী সবসময় মোবাইল ফোনে কার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানতে চাইলে পাপিয়া তাকে জুতা দিয়ে আঘাত করে ও বাড়ী থেকে বের করে দেয়। স্ত্রী পাপিয়া এর আগেও স্বামীকে ঝাড়ু দিয়ে মেরেছিলো। এসব বিষয় নিয়ে স্ত্রীর প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলো স্বামী আবু জাফর হাওলাদার। এক পর্যায়ে মনির নামের একজন ভাড়াটিয়া খুনির সাথে এক লাখ টাকা অর্থ চুক্তিতে স্ত্রীকে হত্যা পরিকল্পনা করে। চুক্তি অনুযায়ী আবু জাফর তার ভাই আবু তালেবের মাধ্যমে মনিরকে অগ্রিম ৩০ হাজার টাকা দেয়। মনির টাকা পেয়ে আবু জাফরকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে নিষেধ করে, কাজ হলে বাড়ির লোকজন তাকে জানাবে বলে জানায়।

কথা অনুযায়ী ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট আবু জাফরের স্ত্রী পাপিয়া ও মেয়ে সওদা জেনিকে কুপিয়ে হত্যা করে মনির হাওলাদার। ঘটনার পরদিন মনির হাওলাদারসহ তার তিন ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু মনির জামিনে বের হলে আবু জাফর মনিরকে জিজ্ঞেস করে তার স্ত্রীকে মারার কথা ছিলো কিন্তু সে কেনো তার মেয়েকে মেরে ফেললো।

বাগেরহাটে মাহিন্দ্রা গাড়ির ধাক্কায় যুবক নিহত

মনির তাকে জানায়, তার মেয়ে মনিরকে চিনে ফেলেছিলো তাই তাকেও হত্যা করা হয়।

প্রসঙ্গতঃ ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট সন্ধ্যায় শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামে নিজ বাড়ীতে পাপিয়া আক্তার (৩৮) ও তার মেয়ে সওদা জেনিকে (৫) কুপিয়ে হত্যা করে মনির হাওলাদার ও তার লোকজন। হত্যার পরদিনই মনিরসহ তার তিন ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তিনমাস কারাভোগের পরে তারা জামিনে মুক্তি পায়। পরে পিবিআই বাগেরহাট মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি পাপিয়ার স্বামী আবু জাফর হাওলাদার (৩৯), ভাসুর আবু তালেব হাওলাদার (৫৫) ও তার স্ত্রী আসমা বেগম (৪৫) এবং পাপিয়ার আরেক ভাশুর আবু বক্কার হাওলাদার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

পরে পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদেরকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।

স্বাআলো/এসআর

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

আজ থেকে মাঠে নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ঢাকা অফিস: ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের ১৫৭ উপজেলা...

বাগেরহাটে খোলা মাঠে সার্কাস দেখতে হাজারো মানুষের ঢল

আজাদুল হক, বাগেরহাট: মাথা মাটিতে ঢুকিয়ে, মাথার চুল দিয়ে...

উপজেলা নির্বাচন: রাত ১২টা থেকে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

ঢাকা অফিস: ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের সাধারণ নির্বাচন...

সৌদিতে আরো এক বাংলাদেশির মৃত্যু

ঢাকা অফিস: পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে চলতি বছর...