সম্পাদকীয়: খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে ইটবাহী ট্রাকের সঙ্গে ইজিবাইকের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ১০ ফেব্রুয়ারি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া ইউনিয়নের আংগারদোহা কালভার্ট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় গুরুতর আহত আরো দুইজনকে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন, আংগারদোহা গ্রামের সাব্বির মোড়ল (২৩), জিয়েলতলা গ্রামের ইজিবাইক চালক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস (৩০), বিল পাবলা গ্রামের নিপা ঢালী (২৫), অজ্ঞাত নারী (২৬) ও শিশু অন্বী বিশ্বাস (২)।
শিশু অন্বীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রেরণ করলে বিকেলে সে মারা যায়।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানুষকে অতীতে অনেকবার পথে নামতে দেখা গেছে। সরকার দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে তাদের ঘরে ফিরিয়েছে। বাস্তবে কি মানুষের দাবি পূরণ হয়েছে, সড়ক কি নিরাপদ হয়েছে? নিরাপদ সড়কের প্রত্যাশা অধরাই রয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কে দাবিতে নজিরবিহীন আন্দোলন গড়ে তুলেছিলো। প্রায়ই তাদের এই দাবিতে আন্দোলন করতে হয়, কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন আর হয় না।
খুলনায় ট্রাক-ইজিবাইক সংঘর্ষ, প্রাণ গেলো ৫ জনের
সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো বদলায়নি। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা প্রভৃতি কারণে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। সড়কের এসব ব্যাধির কোনো নিরাময় মিলছে না। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে সরকার অনেক সিদ্ধান্তই এ পর্যন্ত নিয়েছে। তবে এসব সিদ্ধান্ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাস্তবায়ন করা হয় না।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজ কেনো করা যাচ্ছে না, সমস্যাটা কোথায় সেটা জানা জরুরি। বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত কমিটিগুলো সুপারিশ করেছে। আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দিতে দেখা গেছে। নির্দেশনা দিয়েছে আদালত।
অভিযোগ রয়েছে, পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা কোনো আদেশ-নির্দেশেরই তোয়াক্কা করে না। কারণ তারা রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর কাছে সরকার জিম্মি হয়ে পড়লে সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় শক্ত কোনো ব্যবস্থা
নেয়া কঠিন হবে।
সড়ক নিরাপদ করতে হলে আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিকরা যেনো সড়ক পরিবহন আইন মেনে চলে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
গোটা পরিবহন খাতকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে। এজন্য নিয়মিত মনিটর করা জরুরি।
স্বাআলো/এস