দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইকালে বাতিল হওয়া প্রার্থিতা ফিরে পেতে চতুর্থ দিনে আরো ৯৩ জন প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করেছেন। এ নিয়ে গত চারদিনে আবেদনকারীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪৩১ জন। এর মধ্যে প্রথম দিন আবেদন করেছিলেন ৪২ জন, দ্বিতীয় দিনে ১৪১ জন, তৃতীয় দিনে ১৫৫ জন এবং চতুর্থ দিনে ৯৩ জন প্রার্থী আপিল করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনে চতুর্থ দিনের আপিল আবেদন শেষে এই তথ্য জানা গেছে।
ইসি সূত্র জানায়, রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশনের ভবনের সামনে ১০টি অস্থায়ী বুথে প্রার্থীদের আপিল আবেদন জমা নেয়াহচ্ছে। ৫ ডিসেম্বর হতে আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ আপিল আবেদন জমা দেয়া যাবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপিল শুনানির মাধ্যমে রায় ঘোষণা করা হবে।
আপিলে প্রার্থীদের ছয় নির্দেশনা: নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের জন্য দেয়া হয়েছে বেশ কিছু নিয়ম। সেসব মেনেই প্রার্থীদের আপিল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হচ্ছে। নির্বাচনি আপিল দায়েরের জন্য আপিলকারীর জন্য নির্দেশিত সাধারণ নির্দেশাবলীগুলো হলো, ঘোষিত তফসিল মোতাবেক ৫-৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে নির্ধারিত বুথে আপিল দায়ের করতে হবে।
আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে আইনে বর্ণিত নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে (স্মারকলিপি আকারে) বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে সম্বোধন করে সাত সেট আপিল আবেদন (এক সেট মূলকপি এবং ছয় সেট ছায়ালিপি) দাখিল করতে হবে।
দাখিল করা আপিল আবেদনের সঙ্গে অবশ্যই রিটার্নিং অফিসারের দেয়া সার্টিফাইড কপির মূলকপিসহ আপিল দায়ের সংক্রান্ত সকল প্রকার কাগজপত্র (১% ভোটার তালিকা, ঋণ খেলাপি, হলফনামা, দলীয় মনোনয়ন সংক্রান্ত কাগজপত্র যার জন্য যেটা প্রযোজ্য) প্রত্যেক আপিল আবেদন সেটের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। অন্যথায়, নির্বাচন কমিশনে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে না।
আপিলের ক্রমানুযায়ী নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন কক্ষে (বেজমেন্ট-২) নির্বাচন কমিশন কর্তৃক শুনানি অনুষ্ঠিত হবে এই শুনানিতে প্রার্থী এবং প্রার্থীর পক্ষের আইনজীবী ব্যতিত কোনো জনসাধারণ থাকতে পারবেন না।
এছাড়াও দায়ের করা আপিলসমূহের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠানো হবে এবং নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেও (www.ecs.gov.bd) প্রকাশ করা হবে। এছাড়া আপিলের ফল নির্বাচন ভবনের সামনে প্রদর্শিত মনিটরে প্রদর্শন করা হবে৷ একইসাঙ্গে রায়ের পিডিএফ কপি রিটার্নিং অফিসার ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের ই-মেইল অ্যাকাউন্টে পাঠানো করা হবে। আপিলের রায়ের অনুলিপি উত্তোলনের জন্য নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করে সেটি যথাযথভাবে পূরণ করে নির্বাচন কমিশনের অভ্যর্থনা ডেস্কে জমা দিতে হবে। নামঞ্জুর আপিলের রায়ের অনুলিপি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রদান করা হবে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সারাদেশে প্রার্থীদের জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে গত সোমবার (৪ ডিসেম্বর)। সারাদেশে এক হাজার ৯৮৫ জন প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ৭৩১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র।
এবারের জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছিল দুই হাজার ৭১৬টি। এর মধ্যে বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাতিল করেছেন ৭৩১ জনের। আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। আর ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।
স্বাআলো/এসএ
