হাইকোর্টে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন নাকচ করার প্রতিবাদ না করায় দলটির নেতৃত্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন দলটির বহিষ্কৃত নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন। যিনি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র এই প্রার্থী বলেন, আমি বিএনপির বর্তমান কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ করেছি। আমি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করেছি। উনি যেভাবে দলকে চালাচ্ছেন, সেভাবে দলের সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার, লাখ লাখ নেতাকর্মী আজ গৃহহারা, তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
আখতারুজ্জামান বলেন, শূন্য নেতৃত্ব দিয়ে আর কতদিন চলবে বিএনপি? ফাঁকা বুলিতে আর কতদিন চলবে? মহাসচিবকে হাইকোর্ট থেকে জামিন দেয় না, আর আঙ্গুল চোষে তারা!
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে মনোনয়ন বাতিলের আপিল শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়া নিয়ে বিএনপির এই বহিষ্কৃত নেতা আরো বলেন, আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতো ভদ্রলোককে উচ্চ আদালত জামিন দেয়নি। এর চেয়ে নির্মমতা আর কী হতে পারে। কেনো আমরা এমন একটা কাজ করলাম যে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করবে। কেনো আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই কর্মীদের ওপর? কী রাজনীতি করি আমরা? আজকে আমার মহাসচিব হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন না। কেনো হাইকোর্টের জামিন না দেয়ার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার দিন আলাদা হরতাল দেয়া হলো না? কিসের দল করেন আপনারা?
এক প্রশ্নের জবাবে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান বলেন, আমাকে দেড় বছর ধরে বহিষ্কার করে রেখেছে বিএনপি। তাহলে আমি বিএনপির সিলটা কেনো ব্যবহার করতে যাবো? ব্যবহার করা অন্যায় ছিলো। আমাকে ন্যূনতম সদস্যও রাখা হয়নি। আমি স্বতন্ত্র হয়েছি, বিরোধিতায় তো যাইনি। এটা আবার কি অপরাধ হলো?
উল্লেখ্য, এবার পঞ্চমবারের মতো দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার অভিযোগে আখতারুজ্জামান রঞ্জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পর্যায়ের পদ থেকেও তাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এর আগেও এমন সব অভিযোগে দল থেকে চারবার বহিষ্কৃত হন।
তবে বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে ১৯৯১ সালে পঞ্চম এবং ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া বিগত নির্বাচনসহ দুইটি নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসন থেকে বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক আইজিপি ও রাষ্ট্রদূত নূর মোহাম্মদের কাছে হেরে যান তিনি।
স্বাআলো/এসএ