অনুমোদন পেয়েছে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির

ঢাকা অফিস: ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে এর সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান।

তিনি জানান, ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

ভারতের ন্যাশনাল করপোরেটিভ এক্সপোর্ট লিমিটেডের কাছ থেকে এ পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে ঠিক করে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত আগস্টে ভারতের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজ রফতানিতে সরকার ৪০ শতাংশ শুল্কারোপ করে। এরপর গত অক্টোবরে পেঁয়াজের সর্বনিম্ন রপ্তানিমূল্য নির্ধারণ করা হয় টনপ্রতি ৮০০ মার্কিন ডলার।

কিন্তু অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে এসব পদক্ষেপ খুব বেশি কার্যকর না হয়ায় গত ৭ ডিসেম্বর পেঁয়াজ রফতানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড বা বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক মহাপরিচালকের কার্যালয়। এর পর গত ২২ মার্চ ভারত পেঁয়াজ রফতানি নিষেধাজ্ঞা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়িয়েছে।

ভারত পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও আগের চুক্তি অনুযায়ী ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আসবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

গত রবিবার ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘এই পেঁয়াজ ধীরে ধীরে বাংলাদেশে আসবে। আমাদের পেঁয়াজ এরই মধ্যেই ট্রেনে চড়েছে, যা দর্শনা রুট দিয়ে শিগগিরই দেশে পৌঁছবে।’

স্বল্পমেয়াদে এলএনজি সরবরাহের অনুমোদন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ (সংশোধনী-২০২১)-এর আওতায় সিঙ্গাপুরের গানভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদে এলএনজি সরবরাহের প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয়ক ও সংস্কার সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, সিঙ্গাপুরের গানভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদি প্রক্রিয়ায় এলএনজি সরবরাহের প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। দুই বছরের জন্য এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এই নীতিগত অনুমোদনের পরে ক্রয় কমিটিতে পাঠানো হয়। তখন টাকার অঙ্ক জানা যায়। অপর এক প্রস্তাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনের আওতায় কক্সবাজারের মহেশখালীতে ৬০০ এমএমসিএফডি রি-গ্যাসিফিকেশন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রস্তাবিত দেশের তৃতীয় এফএসআরইউ স্থাপনে সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কম্পানি লিমিটেডের (এসওএসসিএল) সঙ্গে চুক্তি হয়েছিলো। সেই চুক্তি সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কম্পানি লিমিটেডের (এসওএসসিএল) পরিবর্তে সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। সামিটেরই আরেকটি কম্পানি শুধু নাম পরিবর্তন হয়েছে। সেই চুক্তিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে এবং টার্মিনাল ব্যবহার চুক্তি (টিইউএ) একটি বাস্তবায়ন চুক্তি (আইএ) সইয়ের বিষয়টি কমিটিকে অবহিতকরণ করা হয়েছে।

৬৮০ কোটি টাকায় তিন ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন: তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোসহ তিন ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৭৯ কোটি ৮৭ লাখ ৬৭ হাজার ১৫১ টাকা। গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয়ক ও সংস্কার সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, আশুলিয়া, মাধবদী ও চান্দিনায় ১০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং ট্যারিফ প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্পন্সর কম্পানি সামিট পাওয়ার লিমিডেটের সঙ্গে সরকারের ১৫ বছর চুক্তির মেয়াদ ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট শেষ হয়।

তিনি বলেন, পরে আরো পাঁচ বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়, যা শেষ হয় ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট। নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে দ্বিতীয়বার আরো পাঁচ বছর মেয়াদ বাড়াতে বাপবিবো (বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড) সুপারিশ করে। তিনি জানান, বাপবিবো এবং নেগোসিয়েশন কমিটির মাধ্যমে স্পন্সার কম্পানির সঙ্গে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশকৃত চুক্তির শর্ত চূড়ান্ত করে তিনটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর থেকে পাঁচ বছর বৃদ্ধির জন্য সামিট পাওয়ার লিমিডেটের সঙ্গে ট্যারিফ কিলোওয়াট ঘণ্টা ৫.৮২ টাকা হিসাবে নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্ট ভিত্তিতে সংশোধিত চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

স্বাআলো/এসআর

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

জুয়া ও হুন্ডির কারণে মুদ্রা পাচার বেড়েছে : অর্থ প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়শা খান বলেছেন, জুয়া...

সৌদিতে পৌঁছেছে বাংলাদেশের প্রথম হজ ফ্লাইট

ঢাকা অফিস: সৌদি আরবে পৌঁছেছে বাংলাদেশের এ বছরের প্রথম...

নিজের নামে কোনো প্রকল্প চান না প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শেখ হাসিনা’ নাম ব্যবহার...

কোন সড়কে কত গতিতে চলবে মোটরসাইকেল

ঢাকা অফিস: সারাদেশে কোন ধরনের সড়কে মোটরসাইকেল সর্বোচ্চ কত...