যে ৫ ভুলে ঘটতে পারে গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ

বাসাবাড়িতে দিনদিন বেড়েই চলছে এলপিজি সিলিন্ডারের ব্যবহার। দেশের বিভিন্ন এলাকায় দিনের বেলা গ্যাস না থাকায় সিলিন্ডারের ওপর নির্ভর করেন অনেক।

অপরদিকে অনেক নতুন ভবনে গ্যাস সংযোগ না থাকায় সিলিন্ডারের গ্যাসই একমাত্র ভরসা। ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে দুর্ঘটনার পরিমাণও বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায়ই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের খবর শোনা যাচ্ছে।

সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে সাবধানতার সঙ্গে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের বিকল্প নেই। তবে অধিকাংশ ব্যবহারকারীর এসব বিষয়ে পর্যাপ্ত ধারণা থাকে না। এ কারণে তারা গ্যাস সিলিন্ডারের সাধারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো এড়িয়ে যান৷

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে বাঁচতে কিছু বিষয় মেনে চলা অত্যন্ত জরুরী। আসুন জানা যাক, কী কী কারণে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটতে পারে এবং তা থেকে রক্ষা পেতে কী কী পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় সিলিন্ডার স্থাপন

সাধারণ একটি ভুল হলো গ্যাস সিলিন্ডার অনুপযুক্ত জায়গায় রাখা। গ্যাস সিলিন্ডার সূর্যের আলোতে, প্রচণ্ড তাপে বা দাহ্য পদার্থের কাছাকাছি স্থানে রাখলে সিলিন্ডারের ক্ষতি বা বিস্ফোরণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

গ্যাস সিলিন্ডার সবসময় দাহ্য পদার্থ থেকে নিরাপদ দূরত্বে এবং শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। এর পাশাপাশি খোলামেলা, শীতল এবং শুষ্ক জায়গায় গ্যাস সিলিন্ডার স্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া সিলিন্ডারটিকে সবসময় সোজা রাখতে হবে।

সিলিন্ডারের অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ

অনিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ গ্যাস সিলিন্ডারকে বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। এজন্য নিয়মিত ভালভ ও সংযোগস্থলে সাবান পানির দ্রবণ প্রয়োগ করে গ্যাসের লিক পরীক্ষা করতে হবে। এ সময় বুদবুদের সন্ধান পায়া গেলে কিংবা লিকেজ সনাক্ত করা হলে অবিলম্বে সহায়তার জন্য কোনো অভিজ্ঞ কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

এ ছাড়াও সিলিন্ডারটি নিয়মিত মুছে রাখতে হবে, যাতে কখনো মরিচা না ধরে।

ভুল সংযোগ

চুলা বা অন্যান্য যন্ত্রপাতির সঙ্গে গ্যাস সিলিন্ডারের সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংযোগে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা হতে পারে। এজন্য সংযোগগুলো ঠিকভাবে হয়ে কি না এবং কোথাও লিকেজ আছে কি না নিশ্চিত করতে হবে।

অস্থায়ী সংযোগ বা সরঞ্জাম পরিবর্তন এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা, এর ফলে গ্যাস লিকেজ বা বিস্ফোরণ হতে পারে। এ ছাড়া ব্যবহৃত চুলার কোথাও কোনো লিকেজ আছে কি না, তাও নিশ্চিত করতে হবে।

এ ছাড়া সিলিন্ডার পরিবহনের পর চুলার সঙ্গে সংযোগ দেয়ার আগে প্রায় এক ঘণ্টা গ্যাসের বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে।

বায়ুচলাচল উপেক্ষা করা

গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করার সময় অপর্যাপ্ত বায়ুচলাচল স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। গ্যাসের যন্ত্রগুলো অক্সিজেন গ্রহণ করে। একইসঙ্গে কার্বন মনোক্সাইড উৎপন্ন করে, যা আবদ্ধ স্থানের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

এজন্য রান্নাঘরে, বিশেষ করে বাসাবাড়িতে কিংবা ছোট কক্ষে বাতাস চলাচল নিশ্চিত করার জন্য সব সময় জানালা খুলে বা এক্সজস্ট ফ্যান ব্যবহার করে সঠিকভাবে বায়ু চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।

সচেতনতার অভাব

গ্যাস সিলিন্ডারের সুরক্ষা সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব একটি সাধারণ ভুল, যা অধিকাংশ পরিবার করে। এজন্য গ্যাস সিলিন্ডারের সঙ্গে সম্পর্কিত সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং কীভাবে সেগুলো নিরাপদে পরিচালনা করা যায় সে সম্পর্কে শিশুসহ পরিবারের সকল সদস্যকে শিক্ষিত করা গুরুত্বপূর্ণ৷

পরিবারের সকল সদস্যকে শেখাতে হবে, কীভাবে গ্যাসের লিক সনাক্ত করতে হয় এবং জরুরী পরিস্থিতিতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করতে হয়। তা হলেই সম্ভব্য ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

স্বাআলো/এসআর

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

হোয়াটসঅ্যাপে ইন্টারনেট ছাড়াই পাঠানো যাবে ছবি, ভিডিও ও ডকুমেন্ট

বিশ্বজুড়ে বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে মেটার হোয়াটসঅ্যাপ। এই অ্যাপের...

ঈদের দিন ঘুরতে বের হলে করণীয়

ঈদের দিন শুধু নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই আনন্দ ভাগাভাগি...

প্রেমের বিয়ে: বাড়াচ্ছে দাম্পত্য কলহ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রেম করে বিয়ে করলে দাম্পত্য কলহের আশঙ্কা...

বিদায় নিচ্ছে শীত, ত্বকের যত্ন নিতে যা যা করণীয়

শেষ হতে চলেছে শীত। এর মাঝেও উত্তরে হাওয়া মাঝেমধ্যে...