কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশনে এলো ট্রেন, উচ্ছ্বসিত দর্শনার্থীরা

প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশনে এলো একটি ট্রেন।

রবিবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে ট্রেনটি রেলস্টেশনে পৌঁছায়।

দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা অপেক্ষার পর নিজেদের প্ল্যাটফর্মে ট্রেন দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন দর্শনার্থীরা। এরআগে সকাল ৯টায় আটটি বগি ও একটি ইঞ্জিন নিয়ে ট্রেনটি চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়ে।

কক্সবাজারে আসা ট্রেনটিতে রয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার ও রেলের পরিদর্শন অধিদফতরের কর্মকর্তারা। তারা কক্সবাজারে অবস্থান করে ৬ নভেম্বর রেলস্টেশন ইয়ার্ড পরিদর্শন এবং ৭ নভেম্বর সকাল ৭টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়ার কথা রয়েছে।

সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) শাখা সূত্র জানায়, ট্রেনযোগে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে পৌঁছান রেল পরিদর্শন দফতরের টিম। এসময় নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন ও বিভিন্ন স্টেশন পরিদর্শন করা হয়েছে। পথে কোথাও কোনো ত্রুটি আছে কি না তা যাচাই করে দেখা হয়।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার নাজমুল ইসলাম বলেন, এটি আমাদের রুটিন কাজ। এটিকে ট্রায়াল রান বলা যাবে না। আমাদের সঙ্গে রেল পরিদর্শন অধিদফতরের কর্মকর্তারা ছিলেন। তারা রেলপথ পরিদর্শন এবং ইন্টারলকিং সিগন্যালিং ব্যবস্থা, প্ল্যাটফর্ম উঁচু সঠিক কি না, কালভার্ট, লেভেল ক্রসিং গেট দেখেন। ফিরে গিয়ে পরিদর্শন অধিদফতরের কর্মকর্তারা সার্টিফাই করবেন। এরপর ট্রেন চলবে।’

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক সুবক্তগীন বলেন, ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে আসবেন। তিন ট্রেন চলাচল উদ্বোধনের পর বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলবে নভেম্বরের শেষ বা ডিসেম্বরের শুরু থেকে। কক্সবাজার রুটে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ছয় জোড়া ট্রেন চলাচলের পরিকল্পনা আছে। তবে ইঞ্জিন ও বগি সংকটের কারণে এখনই তা হচ্ছে না। পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।

কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশন ও রেলপথ নির্মাণে দায়িত্বে রয়েছেন প্রকৌশলী এনামুল হক সরকার এনাম। তিনি বলেন, আমার অবকাঠামোগত কাজ সমাপ্ত বলা যায়। এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। আমরা ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করতে পেরেছি। বাকি কাজ প্রকল্পের মেয়াদ শেষের আগেই সমাপ্ত হবে বলে আশাবাদী আমরা।

দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৮ সালে রেলপথ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। পরে এক দফা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। এ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলায় নির্ধারিত সময়ের আগেই তা শেষ হতে যাচ্ছে।

২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় প্রকল্পটি। রেলপথটি নির্মিত হলে মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।

স্বাআলো/এসএ

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে ১৭৩ বাংলাদেশি কক্সবাজারে

মিয়ানমারের বিভিন্ন জেলে কারাভোগ শেষ করে এবং সাজা মওকুফের...

বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার: জেলার রামুতে এলোপাতাড়ি গুলি ও কুপিয়ে...

নাফ নদীতে বিজিপির গুলি, গুলিবিদ্ধ ২ বাংলাদেশি

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার: জেলার টেকনাফের নাফ নদীতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী...

মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে বাংলাদেশি ২ জেলে গুলিবিদ্ধ

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার: জেলার নাফ নদে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর গুলিতে...