প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অবিচল থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) ভারত, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের বর্তমান ও সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের একটি দল সংসদ ভবন কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন, ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এস ওয়াই কুরেশি, মালদ্বীপের নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ফুওয়াদ তৌফিক, শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান আরএমএল রথনায়েকে, নেপালের নির্বাচন কমিশনার সাগুন শমশের জেবি রানা এবং নেপালের সাবেক নির্বাচন কমিশনার ইলা শর্মা।
প্রতিবেশী দেশগুলোর বর্তমান ও সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ) এর আমন্ত্রণে তারা বাংলাদেশ সফর করছেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ এর অধীনে গঠিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আইনের অধীনে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও, সরকার নির্বাচন কমিশনকে বাজেটের বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যে সংসদীয় উপ-নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ বেশ কয়েকটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সাক্ষাতের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনে পুরুষদের পাশাপাশি নারী প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন, এছাড়াও নারীদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে, যেখানে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলো থেকে আনুপাতিকহারে অংশগ্রহন করেন।
২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি ৩০০টি আসনে ৭০০ জন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো এবং তারা বারবার তাদের প্রার্থী পরিবর্তন করেছে।
তিনি আরো বলেন, এমনকি, বিএনপি নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য ভোটের দিন তাদের প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করে নেয়।
সরকারপ্রধান অতীতে সামরিক স্বৈরশাসক ও বিএনপি কর্তৃক ভোট কারচুপির চিত্র সম্পর্কেও তাদের অবহিত করেন এবং বলেন, একজন সামরিক স্বৈরশাসক সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন এবং সেনাবাহিনী প্রধান থাকা সত্ত্বেও নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন।
তিনি আরো বলেন, সামরিক স্বৈরশাসকরা অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আরোহণ করেন এবং পরে রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
বিএনপির রাজনীতি সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপিতে এখন কোনো নেতৃত্ব নেই এবং এইদলের দুই শীর্ষ নেতা তাদের অপকর্ম ও অপরাধের জন্য আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত।
বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এস ওয়াই কুরাইশি বলেন, বাংলাদেশের ইসি একটি অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অত্যন্ত আস্থাশীল।
তিনি বলেন, ভারতীয় নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সময় সরকারের প্রশাসনিক ক্ষমতা গ্রহণ করে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
স্বাআলো/এসএ