ইশতেহারে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের ওপর বেশি গুরুত্ব আ.লীগের, টার্গেট যুব সমাজ

দেশের যুব সমাজকে আকৃষ্ট করতে এবারের ইশতেহারে শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের ওপর সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ও ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির আহবায়ক ড. আব্দুর রাজ্জাক।

রবিবার ৫ নভেম্বর) বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির সঙ্গে পেশাজীবীসহ বিভিন্ন কমিউনিটির প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি ।

নির্বাচনি ইশতেহারের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও দুধ, ডিমসহ পুষ্টিকর খাবারে পিছিয়ে আছি। সেটা আগামীতে দূর করতে হবে। এটা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারেনি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনীতির কাঠমোটাকে পুনর্গঠন করতে হবে। এটাকে এমন জায়গায় স্থাপন করতে হবে যাতে আগের গতিশীলতা ও জায়গা পুনরুদ্ধার করতে পারি। এ লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনি ইশতেহারে আমরা এগুবো।

মাথাপিছু আয়, দারিদ্র্য কতটা কমানো হবে সেই পরিকল্পনা ইশতেহারে থাকবে উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এখন দারিদ্র্য ১৮ দশমিক ৪ নামিয়ে আনছি। এটি কমিয়ে আমরা ১২তে নামিয়ে আনবো। অতিদরিদ্র ৯ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।

কর্মসংস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, কর্মসংস্থান করতে হলে আমাদের উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানা বাড়াতে হবে। এটা বর্তমানে ৩০ শতাংশ থাকলেও আগামীতে ৪০ শতাংশে উন্নতি করতে চায় আওয়ামী লীগ।

সবার আলোচনায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সুশাসনের কথা উঠেছে বলে উল্লেখ করে আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজের ব্যবস্থা করবো, সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবো। উন্নয়ন সবার জন্য করবো। কেউ পিছিয়ে থাকবে না।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধরে রাখতে হলে পুরো জনগোষ্ঠিকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে। সংস্কৃতিক বিকাশ ঘটাতে হবে এবং সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে হবে। ধর্মান্ধ ও সাম্প্রদায়িকতা থেকে মানুষকে বের করার জন্য মানুষকে আরও বেশি সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে হবে। আগামীর সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সংস্কৃতির বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে জানান তিনি।

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ ও কর্মসংস্থান হবে আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য। সেটি হলে আমরা সত্যিকারের অর্থে একটা সমৃদ্ধশালী ও উন্নত জাতি হবো সারা পৃথিবীতে। আমরা অহংকার ও গর্ব করে চলতে চাই। নির্বাচনি ইশতেহারের মাধ্যমে আমরা জনগণকে প্রতিশ্রুতি দেবো, যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলাম সেটাকে পুনরুদ্ধার করে দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাব।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা নির্বাচনের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছি। মূল্যায়নের ভার আপনাদের। নির্বাচনি ইশতেহার যেন জাতির আশা আকঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়। তার ভিত্তিতেই নির্বাচনি ইশতেহার দেবে আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। আওয়ামী লীগ সব সময় গঠনতন্ত্র, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ কখনো চোরাগলির পথে বা অসংবিধানিক পথে ক্ষমতায় আসেনি। গণতান্ত্রিক চর্চা করেছে এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চেতনাকে ধারণ আওয়ামী লীগ পরিচালিত হয়েছে। যে সব নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিয়েছে সেসব নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার তুলে ধরার জন্য সেগুলোর তুলে ধরে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছে।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে আওয়ামী যত সাফল্য সেগুলো তুলে ধরছে, তার আলোকে আগামী দিনে আওয়ামী লীগ কী করবে, কী তার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা-প্রত্যাশা কীভাবে পূরণ করবে, তার কর্মসূচি বাস্তবায়নের কৌশল কী হবে সেগুলো নির্বাচনি ইশতেহার সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে- এ বিষয়ে মতামত উপস্থাপনের জন্য সভায় অংশ নেয়া প্রতিনিধিদের অনুরোধ করেন ইশতেহার প্রণয়ণ কমিটির আহবায়ক।

স্বাআলো/এসএ

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আ.লীগের কর্মসূচি ঘোষণা

ঢাকা অফিস: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার...

বিএনপির আরো ৫২ নেতাকে বহিষ্কার

ঢাকা অফিস: বিএনপির আরো ৫২ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।...

‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়’

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালে বিএনপি...

বিএনপির ৪৫ নেতাকে শোকজ

ঢাকা অফিস: দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদের তৃতীয়...