দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল যশোরে রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যশোর ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাড়ে চার লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নেয়া যশোর রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ।
যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলায় হবে এই ইপিজেড। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে ১ হাজার ৫৪২ কোটি ৭২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। আর ইপিজেড কর্তৃপক্ষের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ৩৫০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ২০২৬ সালের ৩০ জুন মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে মূল্যায়ন কমিটির সভায়সভায় প্রাথমিক অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। যশোরে ইপিজেড কার্যক্রম শুরু হলে এই এলাকার অর্থনৈতিক রূপ পাল্টে যাবে। শিল্প বাণিজ্যে প্রাণের ছোয়া পাবে। দেশে শিল্প-বাণিজ্যের প্রসার ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য অনুযায়ী এ কাজটি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে।
যশোর সব দিকে থেকে ইতোমধ্যে জমির সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাইকাজ শেষে করা হচ্ছে জমির মালিকদের তালিকা। দ্রুতভূমি অধিগ্রহণ শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছে যশোর প্রশাসন। তখন জমির মূল্য পরিশোধ করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আসছে বছরের শুরুতে যশোর ইপিজেডের নির্মাণকাজ শুরু করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। অভয়নগরের প্রেমবাগ এলাকায় ৫০৩ একর ভূমি অধিগ্রহণ করার জন্য ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয়া হয়েছিলো। যশোরের অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের চেঙ্গুটিয়া, মহাকাল, পোমবাগ, বালিয়াডাঙ্গা, আলডাঙ্গা, আরাজি, বাটিরঘাট, মাগুরা ও রাজাপুর মৌজায় প্রায় ৬০০ একর ভূমিতে স্থাপিত হবে দেশের ১০ম এই ইপিজেড।
যশোর সব দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলেও কেন জানি এর প্রতি সবার একটা উদাসিনতা রয়েছে। এজন্য পিছিয়ে রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনপদ। এ অবস্থা থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হবে ইপিজেড চালু হবার পর। শিল্প বাণিজ্য প্রসারের ফলে এই এলাকায় ব্যাপকহারে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এতে মানুষের অর্থনৈতিক পালে হাওয়া লাগবে। এতে জীবন মানের পরিবর্তন ঘটবে নিঃসন্দেহে।
কোনোভাবেই যেন ইপিজেড বাস্তবায়নের গতি রুদ্ধ না হয়। দেশের ও দেশের মানুষের স্বার্থে আমরা এই শুভ কার্যক্রমের সফলতা কামনা করি।