বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলা ধোপাখালী এলাকার হত দরিদ্র এক নারীকে কৌশলে ধর্ষণ ও সন্তান জন্ম দেয়ার চাঞ্চল্যকর অপরাধের ঘটনায় ফেরদৌস শেখ নামের একজন ভন্ড কবিরাজকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্ধ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং সন্তানের স্বীকৃতি ও তার ভরণপোষণের জন্য রায় দিয়েছে আদালত।
বাগেরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যাল আদালত-এর বিজ্ঞ বিচারক জেলা ও দায়রা জজ এসএম সাইফুল ইসলাম রবিবার (১ অক্টোবর) দুপুরের পর এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় আসামি ভন্ড কবিরাজ ফেরদৌস শেখ পলাতক ছিলেন।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবারণ ও রায় ঘোষণার বিষয়ে সোমবার (২ অক্টোবর) বিকেলে আদালত সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী এলাকার আবুল হাসানের ছেলে গ্রাম্য কবিরাজ ফেরদৌস শেখ কবিরাজির সূত্র ধরে এলাকার হতদরিদ্র ভিকটিমের অসুস্থ মাকে চিকিৎসার নামে ওই বাড়িতে যাতায়াত করে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এবং ভিকটিমের বাব-মা বাড়িতে না থাকায় ২০১৪ সালের ২ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ভিকটিম গর্ভবতী হয়ে পড়ে। যা ৫/৬ মাস পর জানাজানি হলে ওই ভন্ড কবিরাজ ভিকটিমকে গর্ভ নষ্ট করার জন্য চাপ দেয়। এমতাবস্থায় ভিকটিম পরিবার ভীতস্থ হয়ে পড়লে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে ফেরদৌস শেখকে আসামি করে ওই বছরের ৩ অক্টোবর কচুয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৯(১) ধারায় একটি মামলা করেন। মামলাটি যথাযত তদন্ত করে কচুয়া থানার তৎকালীন এসআই হুমাউন কবির ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারী ফেরদৌসের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির আসামি পলাতক থাকায় দীর্ঘ সময় ক্ষেপন শেষে আদালত ২০১৯ সালে অভিযোগ গঠন করে। একপর্যায়ে এ মামলা ১১ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এসএম সাইফুল ইসলাম রবিবার বিকেলে এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্র পক্ষের কৌশলী স্পেশাল পিপি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রায়ে কবিরাজ ফেরদৌস শেখকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। এ ছাড়া ভিকটিমের সন্তানকে পিতার স্বীকৃতি প্রদানসহ শিশুর ২১ বছর বয়স পর্যন্ত ভরণপোষণ সরকার বহন করবে। পলাতক আসামির সম্পত্তি থেকে আদায় করে ওই সন্তানের অনুকুলে ব্যায় করারও নির্দেশনা দেয়া হয় আদালতের রায়ে।
স্বাআলো/এসএস