যশোরে এক গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে আটক দুইজনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে শনিবার (৭ অক্টোবর) রাতে কোতোয়ালি থানায় এই মামলাটি করেছেন।
রবিবার (৮ অক্টোবর) আটক দুইজনের মধ্যে আলামিন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ তাদের জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।
জবানবন্দি দেয়া আলামিন সদর উপজেলার জিরাট গ্রামের আব্দুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে এবং শামিম হোসেন একই গ্রামের নুর আলী গাজীর ছেলে। এই মামলার পলাতক আসামি সোহেল ওরফে গুটি সোহেল আটক শামিমের ভাই।
যশোরে সৎ মেয়েকে হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ, হত্যার পর ফেলে রাখা হয় রেললাইনে
বাদী মামলায় জানিয়েছেন, এক বছর পূর্বে নরেন্দ্রপুর গ্রামের বটতলা এলাকার এক যুবকের সাথে তার বিয়ে হয়। পারিবাকি বিষয় নিয়ে মনোমালিন্যের কারণে গত ২০ সেপ্টেম্বর তিনি পিতার বাড়ি শাখারীগাতি গ্রামে চলে যান। গত ৪ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে ছোট বোনকে সাথে নিয়ে বাবার বাড়ি থেকে বের হয়ে শাখারীগাতি গ্রামস্থ কমিউনিটি ক্লিনিকের পিছনে নামিয়ে দিয়ে স্বামীর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করেন ওই গৃহবধূ। রূপদিয়া বাজারে এসে তার স্বামী ব্যবহৃত মোবাইলে রিং করে বন্ধ পেয়ে নানা শ্বশুরের সাথে দেখা হয়। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় নানা শ্বশুরকে বাজার থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে দ্রুত তার স্বামীকে বাজারে এসে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। সন্ধ্যা ৬টার পর্যন্ত অপেক্ষা করেও না আসায় তিনি পায়ে হেটে স্বামীর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করেন। জিরাট গ্রামের ফয়সালের বাড়ির সামনে গিয়ে আসামি শামিমের সাথে তার দেখা হয়। পাশেই ইসরার চায়ের দোকানে নিয়ে কলা ও পা রুটি কিনে দেয় শামিম। খাওয়া শেষে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে সাথে নিয়ে রওনা করে। কিছু দুরে গিয়ে আলামিন ও গুটি সোহেলের সাথে দেখা হয়। বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে চাউলিয়া গ্রামের খাটরার মাঠে তেতুল বাগানে নিয়ে গুটি সোহেল তাকে ধর্ষণ করে। পাশাপাশি আলামিন ও শামিম পাহারা দিয়ে ধর্ষণে সহযোগিতা করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে জিরাট গ্রামের সেলিম রেজার ফাইন ব্রিক্সের ইট কাটার ঘরে আলামিন ধর্ষণ করে। এরপরে সোহেল ও শামিম তাকে রেখে বাড়িতে চলে যায়। রাত ২টার দিকে সোহেল ফিরে আসে। এরপর তাকে একই গ্রামের তানজিলার টিনসেড ঘরে নিয়ে সোহেল ধর্ষণ করে। এরপরে ওই গৃহবধূ কান্নাকাটি করলে আলামিন ৫ অক্টোবর ভোর ৬টার দিকে রূপদিয়া বাজারে পৌঁছে দিয়ে চলে যায়। পরে তার পিতার বাড়িতে গিয়ে সকল ঘটনা জানায়। এরপরে এই ঘটনায় ৭ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ ওইদিন সন্ধ্যায় আলামিন ও শামিমকে আটক করে। রবিবার (৮ অক্টোবর) আলামিন ধর্ষণের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
স্বাআলো/এসএস
