যশোরে শিক্ষক ময়মুর হোসেন মনু খুনের ১৮ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো ক্লু খুঁজে পায় না।
সন্দেহের তালিকায় থাকা তাদের আত্মীয় হাসান আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোনো তথ্য-উপাত্য তার কাছ থেকে সংগ্রহ করা যায়নি।
এদিকে এই হত্যার রহস্য উদঘাটন ও খুনিকে শনাক্ত করতে না পারায় মামলাটি ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তার ভাই মামলার বাদী নজরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রাম থেকে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ময়মুর হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের স্ত্রী শিরিনা খাতুন জানিয়েছেন, মণিরামপুর উপজেলার আমিনপুর গ্রামে বাড়ি হলেও তারা যশোরেই বসবাস করতেন। তার স্বামী ময়মুর হোসেন সদর উপজেলার কচুয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি করতেন। অবসর জীবনে বেকারত্ব ঘুচাতে তিনি একটি কর্মের সন্ধান করতে থাকেন। ময়মুরকে দূর সম্পর্কের আত্মীয় বাঘারপাড়া উপজেলার কেশবপুর গ্রামের হাসান আলী বিশ্বাস ভালো একটি কাজের সহযোগিতার জন্য আশ্বস্ত করেন। হাসান আলী তাকে একটি ইন্সুরেন্সে চাকরি দেয়ার কথা বলে ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা নেন। কিন্তু হাসান আলী ইন্সুরেন্সে ময়মুরকে গ্রাহক করে নিজের স্ত্রী ও মেয়েকে গ্রাহক করেছেন। ফলে ইন্সুরেন্সে লভ্যাংশটি হাসান আলী স্ত্রী ও মেয়ের একাউন্টে জমা হয়। এই নিয়ে তাদের দুইজনের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়া দেয়। ২০২১ সালের ১০ মে ওই টাকার বিপরীতে হাসান আলী রূপালী ব্যাংক খাজুরা শাখার একটি চেক দেন ময়মুর হোসেনকে। ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় হাসান আলীকে চাপ দিতে থাকেন ময়মুর হোসেন। টাকাগুলো আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ময়মুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে হাসান আলী। গত ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলে পাওনা টাকা আনার জন্য মোবাইল করে খাজুরা বাজারে যেতে বলেন। ময়মুর হোসেন পরদিন ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে হাসান আলীর বাড়িতে পৌঁছেছেন বলে স্ত্রীকে জানান। একটি নম্বর থেকে স্ত্রী শিরিনার মোবাইলে কল করে জানান তিনি হাসান আলীর বাড়িতে পৌঁছে গেছেন। আবার রাত ৯টা ৪৯ মিনিটের দিকেও স্ত্রীর সাথে তার মোবাইলে শেষবারের মত কথা হয়।
বিভিন্নস্থানে খোঁজখবর নিয়ে ময়মুর হোসেনের কোনো সন্ধান না পেয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী শিরিনা খাতুন কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি জিডি করেন। জিডি করার এক মাস পরে ১০ অক্টোবর সদর উপজেলার যশোর-মাগুরা মহাসড়কের পাঁচবাড়িয়া-বালিয়াডাঙ্গার একটি ডোবার মধ্যে থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের স্ত্রী শিরিনা খাতুনের দাবি হাসান আলী বিশ্বাস পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ময়মুর হোসেনকে খুন করেছে।
এই ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেসন্স) পলাশ বিশ্বাস বলেন, এই ঘটনায় তদন্ত চলছে। তাছাড়া ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত হত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে মারা গেছে বিষয়টি জানা যাচ্ছে না।
স্বাআলো/এসএ