চুয়াডাঙ্গায় জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় এক বছরে চালু হয়নি ব্রিজ

চুয়াডাঙ্গায় পীরপুর-হাটকালুগঞ্জের সড়কে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ এখনো চলমান থাকলেও দুই পাশের অধিবাসীদের জমি দিতে অনিহার কারণে শেষ হতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী সেতুটি ২০২২ সালের ১৮ আগস্টের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের জটিলতায় এক বছর পরও সেতুটি চালু করা সম্ভব হয়নি।

চুয়াডাঙ্গার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতর থেকে পাওয়া তথ্য মতে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পীরপুর গঞ্জের হাট সড়কে দুই হাজার ৫০০ মিটার চেইনেজে ৯০ মিটার পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজ গত ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়। এর আগে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি চুক্তিমূল্যের ছয় কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ১০ টাকা ব্যয়ে এ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।

এলজিইডির উপজেলা ইউনিয়ন গ্রাম সড়কে অনুর্ধ্ব ১০০ মিটার ব্রীজ নির্মাণ প্রকল্পের এ কাজটি কুষ্টিয়ার মেসার্স সৈকত এন্টারপ্রাইজ জেভিসিএ স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার নুরুজ্জামান মিয়া পাওয়ার পর স্থানীয়ভাবে বাস্তবায়ন করছেন চুয়াডাঙ্গার মেসার্স ইমি মোর্টসের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার ইলিয়াস হোসেন।

ব্রিজ নির্মাণ অংশে নদীর দুই পাড়ের হাটকালুগঞ্জ গাঙপাড়া ও পীরপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান, সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন যেদিন ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন সেদিন আনন্দে আত্মহারা হয়ে নদীর দুই পাড়ের জমির মালিকগণ ব্রিজের সংযোগ সড়ক করার জন্য স্বেচ্ছায় জমি দেয়ার অঙ্গিকার করেছিলো। তারপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষের দিকে চলে আসায়, ঠিকাদার সংযোগ সড়ক নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করলে জমির মালিকগণ বাধা সৃষ্টি করে।

নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতর থেকে পাওয়া তথ্যে আরো জানা যায়, এ দফতর থেকে ২ জানুয়ারি জমি অধিগ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। একই বছরের ১৬ জুলাই মন্ত্রণালয় থেকে জমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দেয়া হয় এবং ২৩ জুলাই পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হলে সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়া যায় ২১ আগস্ট। তারপর জমি অধিগ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মতিতে তার দফতরে ২০ আগস্ট প্রস্তাব পাঠানো হয়, যা জেলা ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই ব্রিজটি নির্মাণের জন্য হাটকালুগঞ্জ এলাকায় ০ দশমিক ৩৪১৮ একর ও পীরপুর এলাকায় ০ দশমিক ৩০৬৪ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হলে ব্রিজটির সংযোগ সড়ক ও বাকি নির্মাণ কাজ শেষ হবে। তারপর ব্রিজটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

এ বিষয়গুলো না জেনে কয়েকটি গণমাধ্যমে ব্রিজটি নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যা মোটেও কাম্য নয়। যদি সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করে ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ হতো তাহলে সংবাদ প্রকাশ যথার্থ হতো, কিন্তু কাজ শেষ না হতেই ব্রিজটি কীভাবে সংবাদের শিরোনাম হলো, তা অবাক করার মতো বিষয় !

স্বাআলো/এসএস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

ইতিহাসের রেকর্ড তাপমাত্রায় শ্রমজীবীদের পাশে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ

জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গায়: তীব্র গরমে রিকশা ও ভ্যান চালকদের...

চুয়াডাঙ্গায় মহান মে দিবসের র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: ‘শ্রমিক-মালিক গড়ব দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ,’...

যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৮ ডিগ্রি

যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় যৌথভাবে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা...

উপজেলা নির্বাচন: দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে চুয়াডাঙ্গায় দুই এমপির ভাই ও ভাতিজা চেয়ারম্যান প্রার্থী

জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে চুয়াডাঙ্গার দুই...