যশোরে টিএমএসএসর প্রতারণা, ঘুষ না দেয়ায় ঋণ পেলেন না ব্যবসায়ী

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঋণ দেবার নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএসর) তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

লাখ টাকা ঘুষ না দেয়ায় যশোরের এক ব্যবসায়ীকে ঋণ না দেয়ার অভিযোগ ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ফলে ওই ব্যবসায়ী লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে অভিযোগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোরের ফল ব্যবসায়ী ফোরকান হোসেন তিন বছর ধরে টিএমএসএসর সাথে আর্থিক লেনদেন করেন। করোনার সময় তিনি তার ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেছেন। সর্বশেষ তিনি চার লাখ ৮০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। কিন্তু শহরের মুড়লি থেকে পালবাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলার সময় অনেকের আড়ৎ বন্ধ রাখতে হয়। এসময় তিনি কয়েক কিস্তির টাকা দিতে দেরি করেন। সম্প্রতি টিএমএসএসর শাখা ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী ফোরকান হোসেনকে প্রলোভন দেখান আপনার সব টাকা পরিশোধ করে দেন। তাহলে আপনার ১০ লাখ টাকার ঋণ দেয়া হবে। এজন্য জোনাল ম্যানেজার কামাল উদ্দিনের সাথে কথা বলেন। ব্যবসায়ী ফোরকান হোসেন জোনাল ম্যানেজার কামাল উদ্দিনের সাথে দেখা করেন। তিনিও আশ্বাস দেন এবং জানান আপনার আগের ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে হবে। এই আশ্বাস পাওয়ার পর ফোরকান হোসেন বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা ধার নিয়ে ঋণের টাকা পরিশোধ করেন। এরপর ফোরকান হোসেন টিএমএসএসর অফিসে প্রতিনিয়ত যাতাযাত করতে খাকেন। এক পর্যায়ে তাকে জানানো হয়, আপনার ১০ লাখ টাকার ঋণ নিতে হলে এক লাখ টাকা আমাদের দিতে হবে। আমরা তিনজন (ডোমেন স্যার, জোনাল স্যার ও শাখা ব্যবস্থাপক) এই টাকা নিবো। আমাদের এক লাখ টাকা দিলে আমরা আপনার ঋণের ব্যবস্থা করে দিতে পারবো। তা না হলে আমাদের পক্ষে ঋণ দেয়া সম্ভব না।

ভুক্তভোগী ফোরকান হোসেন অভিযোগ করেন, তারা আমাকে ১০ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো। আমার দেড় লাখ টাকা কিস্তি বাকী ছিলো। আমি টাকা ধার করে তাদের সমস্ত টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমাকে প্রায় ২০ দিন ধরে ঘুরিয়েছে। এরপর আমার কাছে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে। আমি তাদের বলি এক লাখ টাকা ঘুষ দেবো আবার ঋণের সুদ দিতে হবে দুই লাখ টাকা। এখানে আমার তিন লাখ টাকা চলে যাবে। তাহলে বাকী টাকা নিয়ে আমি কিভাবে ব্যবসা করবো। তারা আমার ঋণ দেয়নি। এখন ধারের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, তার তিন বছরের ১২টি চেকের পাতা, স্টাম্প, আইডি কার্ড, ছবিসহ যাবতীয় কাগজপত্র ২৭ মার্চ ফেরত দেবার কথা ছিলো। তারা সাদা কাগজে লিখিত দেবার পরও কোনো ডকুমেন্ট দিয়ে যায়নি। কিন্তু আজ পাঁচদিন পার হয়ে গেলেও তারা কোনো কাগজপত্র ফেরত দেয়নি। উল্টো আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।

এদিকে, বিভিন্ন অভিযোগ থেকে জানা গেছে, জোনাল ম্যানেজার কামাল উদ্দিন ও শাখা ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিসহ সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনেক নারীর সাথে দৈহিক মেলামেশা করে তাদেরকে ঋণ দেয়ার অভিযোগ এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এই দুই কর্মকর্তার কথা মত কাজ না হলে তারা তাদের ঋণের জন্য কোন প্রকার সুপারিশ করেন না। তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছে যশোরের অনেক নারী। লোকলজ্জার ভয়ে অনেক নারী মুখ খুলতে সাহস পায় না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জোনাল ম্যানেজার কামাল উদ্দিনের কাছে ফোন করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন।

যোগাযোগ করা হলে শাখা ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সবই মিথ্যা। তিনি বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিতে হলে কোনো ঘুষ দিতে হয় না। আমরা ঘুষ চাইছি তার কোনো প্রমাণ নেই।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

বাগেরহাটে পোলেরহাট বাজারে অগ্নিকান্ড, ১২ টি দোকান পুড়ে ছাই

আজাদুল হক, বাগেরহাট: জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার দৈব্যজ্ঞ্যহাটি পোলের হাট...

যশোরের নরেন্দ্রপুর ও বসুন্দিয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থী বিপুলের পথসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নে পথসভা করেছেন...

চুয়াডাঙ্গার কাঠপট্টিতে অগ্নিসংযোগ, মূল আসামি সোনা আটক

জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: জেলার জীবননগর উপজেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন...

নির্বাচনে প্রার্থী যদি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করে ছাড় দেয়া হবে না: যশোরে ইসি হাবিব

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান...