পূরণ হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের আরেক স্বপ্ন। পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরুর মাধ্যমে এ অঞ্চল হয়ে উঠবে যোগাযোগ ও স্থানীয় অর্থনীতির কেন্দ্র। এর মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প-কারখানার প্রসার বাড়বে।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ট্রেনযাত্রার অবসান ঘটবে। পদ্মা রেল সেতু হয়ে খুলনা-ঢাকা রেল চলবে। খুলনা-যশোর-রাজবাড়ী হয়ে পদ্মা রেল সেতু হয়ে তা রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছাবে। সময় লাগবে ছয় ঘণ্টার মতো।
এতে নিরাপদ যাত্রীসেবার পাশাপাশি স্বল্প খরচে পণ্য পরিবহনেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে বলে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
এছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য কম খরচে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দ্রুত পাঠানো সম্ভব হবে। যাতায়াত খরচও অনেক কমে যাবে।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতুর মতো পদ্মা রেল সেতুও দক্ষিণাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপকভাবে অবদান রাখবে। এটি সরকারের প্রশংসনীয় উদ্যোগ। রেল সেতু চালু হলে পণ্য পরিবহন খরচ অনেকটাই কমে আসবে।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। এটাকে আরো বেগবান করবে পদ্মা রেল সেতু। ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের রেলযোগাযোগ সৃষ্টি হওয়ায় পণ্য পরিবহন খরচ অনেক কমে আসবে।
ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকায় স্বল্প খরচে মাছ পরিবহনে রেলযোগাযোগের বিকল্প নেই। এতে ঢাকার বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়বে।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অধীন ঢাকার কমলাপুর থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত আপাতত ট্রেন চলবে। প্রকল্পের এই পথের দৈর্ঘ্য ৮২ কিলোমিটার। ঢাকার এই ট্রেন পরে ভাঙ্গা থেকে রাজবাড়ী হয়ে খুলনা ও রাজশাহী যাবে। বর্তমানে খুলনা-ঢাকা পথে চলাচলকারী সুন্দরবন এক্সপ্রেস নিয়মিত পথ থেকে সরিয়ে এনে পদ্মা সেতু দিয়ে চালানো হবে।
পদ্মা রেল সেতু হয়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেসের চলাচলের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। তবে সময়সূচি এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
খুলনা স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা রনি বলেন, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি পদ্মা রেল সেতু হয়ে চলাচল করবে বলে শুনেছি। তবে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।
স্বাআলো/এসএ