ভরণ পোষণের দাবিতে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার মা ফরিদা বেগম। ৮ সেপ্টেম্বর যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়ার মৃত লিয়াকত আলীর স্ত্রী এই মামলাটি করেছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দিয়েছেন। আসামি কুষ্টিয়ায় জাপান টোবাকো কোম্পানিতে কর্মরত আছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ফরিদা বেগমের চার মেয়ে ও এক ছেলে। স্বামী লিয়াকত আলী অসুস্থ হলে ছেলে চিকিৎসার নাম করে তার বাসায় নিয়ে যায়। এরপর তার পিতাকে ভুল বুঝিয়ে অন্য শরীকদের ফাঁকি দিয়ে বসতবাড়ির সাড়ে ৬ শতক জমি দলিল করে নেয়। কিছুদিনের মধ্যে তার লিয়াকত আলী মারা যান। এর মধ্যে ৬০ লাখ টাকায় এই জমি বিক্রি করে দেয়। সম্প্রতি বাড়িতে এসে মাকে বাড়ি থেকে নামিয়ে ক্রেতাকে বুঝে দেয়। বর্তমানে ফরিদা বেগম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নিরুপায় হয়ে তিনি ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন।
গণমাধ্যমে প্রতিনিয়ত অসহায় মা-বাবার প্রতি সন্তানদের নিষ্ঠরতার কথা আসছে। কেউ কৌশলে জমাজমি লিখে নিয়ে মা-বাবাকে বাড়ি থেকে নামিয়ে দিচ্ছে, বাথরুম নোংরা করার অভিযোগে ছেলের আলিশান বাড়িতে মা-বাবার জায়গা হচ্ছে না আরো কত কি। ঠিক সেই সময় এক ছেলে তার বাবার জীবন বাঁচাতে নিজের একটি লিভার দিয়েছেন বাবার জন্য। কিন্তু দুঃখজনক ঘটনা হলো বাবা বাঁচেনি। লিভার প্রতিস্থাপনের চার মাস পর ৪ অক্টেবর তিনি মারা গেছেন। বাবা যশোরের মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াটির বাসিন্দা। তার ছেলে ওয়াসিব আহমেদ শুভ। একই জেলার দুটি ঘটনা। একটি মানবিক অন্যটি পাশবিক।
শুভ যে দৃষ্টান্ত রেখেছে তার জন্য তাকে স্যালুট করতে হয় আর সন্তান যা করেছে তা জানোয়ারের চেয়েও নিষ্ঠুরতম। তার নিন্দার ভাষা জানা নেই।
আজকাল ছেলেরা মা-বাবার সাথে যে আচরণ করছে তাতে বন্য পশুর মধ্যে আর ওই সব নিষ্ঠুর সন্তানের মধ্যে পার্থক্য করা যায় কি? মানুষ আশরাফুল মখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টি সেরা জীব। যারা মানুষের সমাজে বাস করেও পশুর মতো আচরণ করে তাদের এ সমাজে বাস করার কোনো অধিকার থাকা উচিত নয়। বনই তাদের জন্য উপযুক্তস্থান।