প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, দেশের উন্নয়নে যে পদক্ষেপই নেয়া হোক না কেনো সুন্দরবন এবং এর জীববৈচিত্র্য যেনো কোনোভাবেই যেনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সরকার প্রধানের এ আহবানের প্রতি সবার সচেতন থাকা বাঞ্চনীয়। কিন্তু আমরা কেউ সেদিকে খেয়াল করছি না।
সুন্দরবনে হরিণ ধরা নিষেধ হলেও শিকারীরা হরিণ ধরতে জাল পাতছে কি করে? হরিণ শিকারীদের রেহাই দেয়া যায় না। কারণ তারা হরিণ শিকার করতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাঘ হত্যা করে। দেশের এক শ্রেণির ভোজন রসিকদের লালসা পূরণে শিকারীরা আইন অমান্য করে হরিণ শিকার করে সরবরাহ করে মোটা অঙ্কের টাকা বাগায়। এই বোজন রসিকরাও কম দায়ী নয়।
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রতি রাতে চোরা শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা ফাঁদ পেতে রাখছে। সেই ফাঁদে আটকে পড়া হরিণ নিয়ে ভোরে সেই হরিণ নিয়ে লোকালয়ে গিয়ে মাংস বিক্রি করছে। সম্প্রতি এভাবে ধরা তিনটি হরিণের ৮০ কেজি মাংস নিয়ে যাবার সময় বনরক্ষীদের তাড়া খেয়ে শিকারীরা পালিয়ে যায়।
শুধু হরিণ নয়, সুন্দরবনের বাঘও শিকার করা হচ্ছে অবলীলায়। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশে বছরে বাঘের মৃত্যুর ঘটনা ছিলো একটি করে। চোরা শিকারীদের অস্ত্রের আঘাতে বেশির ভাগ বাঘের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে ২০০৪ সালের পায়ের ছাপ গুনে করা জরিপে ৪৪০টি বাঘ থাকার কথা বলা হয়েছিলো। কিন্তু ২০১৫ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ক্যামেরা ফাঁদের মাধ্যমে করা জরিপে বাঘের সংখ্যা বেরিয়ে আসে ১০৬টি। এরপর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আরেকটি শুমারি করে জানায়, বাঘের সংখ্যা ১১৪টি।
বাঘ রক্ষার জন্য বন বিভাগকে যেভাবে প্রস্তুত করা দরকার, তা এখনো হয়নি। এ কারণে আদৌ সুন্দরবনে কোনোমতে বাঘগুলো শেষ পর্যন্ত টিকবে কিনা সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
স্বাআলো/এস