যশোরে অবরোধের ডাক দিয়েই লাপাত্তা বিএনপির শীর্ষ নেতারা

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে হরতাল-অবরোধের ডাক দিয়েই লাপাত্তা যশোর জেলা বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতারা। ফলে নাশকতা মামলায় আটক মাঠ পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী এখন রাজনীতি ছাড়তে দিনক্ষণ গুনছেন। ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশে পুলিশ হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার পর থেকে নিজেদের রক্ষা করতে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এমনই কথা চিন্তা ভাবনা করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠে ছিলোনা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবং তাদের সহযোগী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। আসছে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০১৩-১৪ সালের মত সন্ত্রাসী কায়দায় মাঠ দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। সেই সাথে তাদের উত্তরসূরি জামায়াতে ইসলামী ও মাঠে নেমেছে। এরই মধ্যে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় একটি মহাসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। কিন্তু তাদের সাথে গাটবাধা সহযোগি সংগঠন জামায়াতে ইসলামী একইদিনে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দেয়। দুইদলের শীর্ষ নেতাদের পরিকল্পনা অনুযায়ি শাপলা চত্তরের মত ঘটনা ঘটাতেও তারা চেষ্টা চালায়। কিন্তু সমাবেশের মধ্যে বিএনপি দলীয় সন্ত্রাসীরা একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে। একই সাথে প্রধান বিচারপতির বাস ভবনেও হামলা করে তারা। পাশাপাশি শীর্ষ নেতাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ফাঁস হয়ে যায়। পুলিশ হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাস ভবনে এবং সাংবাদিকদের হামলার ঘটনায় কয়েকটি মামলা করে পুলিশ। আর ওই মামলায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। এরই প্রতিবাদে সারাদেশে দুই দফায় অবরোধের ঘোষণা দেয় বিএনপি।

সূত্রে জানা গেছে, অবরোধের ঘোষণা দিয়েই মাঠ থেকে লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। কিন্ত পুলিশের বিভিন্ন সময়ের অভিযানে আটক হচ্ছেন মাঠ পর্যায়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা নেতাকর্মীরা। রাজনৈতিক মামলায় মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আটক হলেও আদালতে জামিনের জন্য নিজস্ব কায়দায় টাকা পয়সা জোগাড় করতে হচ্ছে। আর তাই মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ওই মামলাগুলোকে এখন গলার কাঁটা হিসেবে দেখছেন। তারা টাকা খরচ করে জামিন হতে পারছেন না। অথচ দলীয় জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা তাদের কোনো খোঁজখবরই নিচ্ছেন না বলে একাধিক কর্মীরা অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু রাজকীয়ভাবে জীবনযাপন করছেন শীর্ষ সেই নেতারা। সেকারণে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এখন অনেকেই শুধু রাজপথই নয় রাজনীতি থেকেও সরে যেতে চেষ্টা চালাচ্ছেন অনেকে।

সূত্রে আরো জানা গেছে, খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মারুফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুনির আহম্মেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল গফুর, হাজী আনিচুর রহমান মুকুল, যুবদলের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক মুন্না, বর্তমান যুবদল নেতা তমাল আহম্মেদসহ জেলা পর্যায়ের অসংখ্য নেতা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

এই ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির মাঠ পর্যায়ের এক নেতা বলেন, থানা এবং জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা অনেকেই গা-ঢাকা দিয়েছেন। কেউ কেউ প্রকাশ্যে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে তারা আসছেন না। ফলে বিভিন্ন মামলায় পুলিশ তাদের খুঁজে পাচ্ছে না। ফলে কিছুদিন যেতে না যেতেই দলটিতে কোনো কর্মী আর মাঠে পাওয়া যাবেনা।

স্বাআলো/এসএ

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

জনগণ এখন মর্যাদা নিয়ে বিশ্ব দরবারে চলতে পারে: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আব্দুল হাইয়ের মতো...

উপজেলা নির্বাচন: তৃতীয় ধাপে মনোনয়ন জমা দিলেন ১৫৮৮ প্রার্থী

ঢাকা অফিস: আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের...

আরো কমলো সোনার দাম

ঢাকা অফিস: টানা অষ্টমবারের মতো দেশের বাজারে কমলো সোনার...

৭৫ পরবর্তী সবচেয়ে সুষ্ঠু হয়েছে দ্বাদশ নির্বাচন: কাদের

ঢাকা অফিস: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন...