‘ডাক্তার সাহেবরা শুধু প্র্যাক্টিস আর টাকা কামাই করে, গবেষণায় যায় না’

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ সাধন ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এ ক্ষেত্রে আমাদের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায় একটু পিছিয়ে আছি। ডাক্তার সাহেবরা শুধু প্র্যাক্টিস করে আর টাকা কামাই করে, গবেষণার দিকে বেশি যায় না। এখন গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

সোমবার (১১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ ও বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আমি এবং আমার বোন শেখ রেহানা টানা ছয় বছর দেশে আসতে পারিনি। আমরা বিদেশে রিফিউজি হিসেবে ছিলাম। ৮১ সালে দেশে ফিরে আসি। এরপর আমার একটাই লক্ষ্য ছিলো যে, বাংলাদেশকে উন্নত করা, দেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। সেই প্রত্যয় নিয়েই আমি ফিরে এসেছিলাম। কিন্তু আমার চলার পথ এতো সহজ ছিলো না। কারণ আমার বাবা-মার খুনিদের বিচার হবে না বলে ইনডেমনিটি আইন পাস করা হয়েছিলো। তখন খুনিদের রাজত্ব ছিলো। যে যুদ্ধাপরাধীরা আমাদের মা-বোনকে পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে তুলে দিয়েছিলো, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিলো। সেই যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে ক্ষমতায় বসানো হয়েছিলো।

তিনি বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছিলো অস্ত্রের ঝনঝনানি, সেশনজট। শিক্ষার পরিবেশটাই নষ্ট করা হয়েছিলো। ১৯৯৬ সাল যখন ক্ষমতায় আসি তখন একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম যে বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা খুবই কম।

বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র-ছাত্রী নাই বলতে গেলে। এর ফলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার উপর আমরা জোর দিই। আমরা ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিই। যাতে প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতি মানুষের আকর্ষণ তৈরি হয়।

সরকারপ্রধান বলেন, কারিগরি শিক্ষা আমাদের অত্যন্ত দরকার। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো গবেষণা। গবেষণায় কোনো বিশেষ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হতো না। ৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমি তাৎক্ষণিকভাবে ১২ কোটি টাকা গবেষণায় বরাদ্দ দিই। বিশেষ করে কৃষি গবেষণায় গুরুত্ব দিই। কারণ তখন আমাদের ৩০ লাখ মেট্রিকটন খাদ্য ঘাটতি ছিলো। তারপর থেকে প্রতি বাজেটে আমরা প্রযুক্তি শিক্ষা ও গবেষণার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া শুরু করি। এভাবেই আমরা কাজ করে যাই।

তিনি বলেন, গবেষণা ছাড়া কখনো কোনো কিছুতে উৎকর্ষতা লাভ করা যায় না। আমরা কৃষির ওপর গবেষণার পদক্ষেপ নিয়েছিলাম বলেই মাত্র তিন বছরে (১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯) বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে সক্ষম হই।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

ফোর্বসের ‘৩০ অনূর্ধ্ব ৩০’ এশিয়া তালিকায় ৯ বাংলাদেশি

ঢাকা অফিস: এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে যারা পরিবর্তন আনছেন এবং...

অনুমোদন পেলো দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি

ঢাকা অফিস: নতুন অর্থবছরের (২০২৪-২৫) জন্য দুই লাখ ৬৫...

একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই

ঢাকা অফিস: চলতি বছরের একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য...

সৌদি আরব পৌঁছেছেন ২১০৬৩ হজযাত্রী

ঢাকা অফিস: হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর বুধবার পর্যন্ত...