সম্পাদকীয়: আজ মহান স্বাধীনতা দিবস। গণমানুষের অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার ছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল প্রণোদনা, যা দেশটির পবিত্র সংবিধানে স্বীকৃত।
বাংলাদেশ একটি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছিলো। পলাশীর আম্রকাননে স্বাধীনতার শেষ সূর্য অস্তমিত হবার পর বিদেশি শাসনের হাত বদলের পালায় ২৪ বছর পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসনের যাতাকলে কাটাতে হয়েছে এ দেশবাসীকে। ওই ২৪ বছর তথাকথিত স্বাধীনতার নামে ধর্মের ছদ্মাবরণে এ দেশবাসীকে শোষণ বঞ্চনার অক্টোপাসে আটকে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছিলো।
এ অবস্থার ভেতর থেকে জাতি যখনই বেরিয়ে আসতে চেয়েছে তখনই অত্যাচারের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে। কিন্তু গর্বিত ইতিহাসের ধারক কোনো জাতিকে এভাবে দাবিয়ে রাখা যায় না, ইতিহাসের এ শিক্ষা থেকে পাকিস্তানিরা শিক্ষা না নেয়ায় তাদেরকে পাত্তাড়ি গোটাতে হয়। দীর্ঘ গণতান্ত্রিক লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করে।
পাকিস্তানিদের সে শোচনীয় পরাজয় ইতিহাসের কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে।
স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় চেতনা শানিত হোক ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, বলিষ্ঠ হোক স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার শপথ। একটি সুখী, সুন্দর সমৃদ্ধ জাতি গড়ার মানসে সবাই উন্নয়নের পথে হাটুক, হাটুক উন্নয়নের মহাসড়কে। এ দেশের মানুষকে শান্তির ছায়াতলে নিশ্চিন্তে বসবাসের লক্ষ্যে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসকে নির্বাসিত করার শপথ নিতে হবে। কেননা এ দুইটি অকল্যাণকর বিষয়ের সাথে সহাবস্থান করে কোনো দিন উন্নয়ন হতে পারে না। আর উন্নয়ন না হলে সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি কিছুই আসবে না।
যতো বাধা বিপত্তি আসুক না কেনো সব কিছু এড়িয়ে গণতন্ত্রকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে। প্রতিষ্ঠিত করতে হবে মতো প্রকাশের স্বাধীনতা। এ কথা সত্য যে একটি সমৃদ্ধ দেশের প্রধান এ দুইটি অনুসঙ্গ সরকারের ক্ষমতাকে নড়বড়ে করে না, করে দৃঢ়। এ ক্ষেত্রে অতীত সরকারগুলোর ভুলের বা অহংকারের খেশারত দিতে হয়েছে, যা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে।
মহান স্বাধীনতা দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হোক হয় কালিমা মুছে একটি সুষম সমাজ প্রতিষ্ঠা করার। কাউকে দূরে ঠেলে দিয়ে নয়, দেশপ্রেমিক সবাইকে সাথে নিয়ে, বিভেদ ভুলে এগিয়ে চলতে পারলে যতো কঠিন হোক না কেনো তা সহজেই মোকাবিলা করা যাবে।
পদ্মা সেতু দৃশ্যমান সমাপ্তি তার একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। মহান স্বাধীনতা দিবস অমর হোক। স্বাধীন জাতি হিসেবে বাঙালি এগিয়ে চলুক, আজকের এ দিনে এ কামনা করি।
স্বাআলো/এসআর