এক শ্রেণির ডাক্তার আছেন যারা হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ওষুধের নাম শুনলে নাক শিটকান। তারা মানতেই চান না যে এগুলো ওষুধ এবং অনেক জটিল রোগ এ ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ভালো হয়। কিন্তু আশার কথা হলো যশোর জেনারেল হাসপাতালে অল্টারনেটিভ মেডিসিন চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
সরকার এখন এর ওপর আরো জোর দিচ্ছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালে সপ্তাহের শুক্রবার বাদে ছয়দিন নিয়মিত রোগীদের সেবা দেয়া হয় এখানে। সেই সাথে ফ্রি ওষুধ দেয়া হয়। প্রতিদিন গড়ে ৩৫ জন রোগীকে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। সবচেয়ে বেশি রোগী আসে গাইনি, চর্ম, স্কিন, ইউরিন ইনফেকশন ও অ্যাসিডিটির। এখান থেকে বেশ কিছু ওষুধও ফ্রি প্রদান করা হয়। গত তিন মাসে প্রায় তিন হাজার রোগী হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
হাসপাতালের অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ারের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা বলেন, হোমিওপ্যাথি, ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। হাসপাতালে চলমান চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি বিকল্প চিকিৎসাসেবার মাধ্যমেই সহজে আরোগ্য লাভ করা যায়। কিন্তু এ তথ্য অনেকেরই অজানা। সরকার এ তিন ধরনের চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়নে অনেক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। বিকল্প চিকিৎসার নামে প্রতারণার অভিযোগও অনেক। বিশেষ করে যৌন চিকিৎসার নামে এক শ্রেণির চিকিৎসক মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। এ জেলাই মঘা ইউনানি ও হারবাল চিকিৎসার নামে বেশ কয়েকটি চিকিৎসা কেন্দ্র আছে। এমনকি ওইসব কেন্দ্রে ‘সর্বরোগের মহৌষধ’ দেয়ার কথাও বলা হয়। বিভিন্ন প্রাণীর তেলসহ অদ্ভুত সব দাওয়াই দেয়া হয়। এগুলো প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না। এইসব ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা ব্যবস্থার সুনাম নষ্ট করছে। তা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
অনেকেই চিকিৎসকের যোগ্যতা ছাড়া বা ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে এ সব প্রতিষ্ঠান খোলে। এর বিরুদ্ধে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ মাঝেমধ্যে ব্যবস্থা নেয়। তবে মনিটরিং আরো জোরদার করা প্রয়োজন। তাছাড়া মানুষকেও সচেতন করতে হবে। সচেতন হতে হবে। জানতে হবে অল্টারনেটিভ মেডিসিন একটি স্বীকৃত চিকিৎসা ব্যবস্থা।
সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাসও বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি বর্তমানে সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে আয়ুর্বেদিক, ইউনানি ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে।
স্বাআলো/এস
